কাপড় ডিজাইন করার নেশাই এখন পেশা

0
উদ্যোক্তা মিথিলা তাসফিয়া

ফ্যাশন কমিউনিকেশন, ফ্যাশন টেকনোলজি কিংবা ফ্যাশন ডিজাইনিং। ফ্যাশন ডিজাইনার হতে এতকিছু জানতে গেলে পড়াশোনা করতে হয়। বাড়ি বসে নেট ঘেঁটে পড়লে একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরিও হতে পারে। কিন্তু বিষয়টিতে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের কাছে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নেওয়া জরুরি। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মিথিলা তাসফিয়া। শুধুমাত্র নিজের শখ ও মেধা কাজে লাগিয়ে কাপড় ডিজাইন করে ব্যবসা করছেন। শুরু করেছেন একটি নিজের উদ্যোগ।

মিথিলা তাসফিয়ার প্রতিষ্ঠান ‘Fabixo by Mithi’. বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। গ্রামের বাড়ি নোয়াখালি এবং বড় হয়েছেন ঢাকাতে। পড়াশোনা করেছেন ইডেন মহিলা কলেজে। শিক্ষাজীবন শেষে চাকরি শুরু করেন একটি মেকআপ প্রতিষ্ঠানে, এরপর আড়াই বছর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে। বর্তমানেও ব্যবসার পাশাপাশি খালাতো বোনের বিউটি সেলুনে হেড অফ এইচআর অ্যান্ড অ্যাডমিন হিসেবে চাকরি করছেন।

উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন: ইউনিভার্সিটিতে থাকা অবস্থায় যখন চাকরি করছিলাম, তখন থেকে উদ্যোক্তা হয়ে উঠা। আমার সবসময় চাকরি থেকে ব্যবসার প্রতি ঝোঁক বেশি ছিল। আর আমি সবসময় নিজের কাপড় নিজে ডিজাইন করে পরতে পছন্দ করতাম। সেই পছন্দ থেকেই ব্যবসার ভাবনা শুরু। ফ্যাশন ডিজাইন এমন একটি শিল্পমাধ্যম যার সাহায্যে একজন ডিজাইনার তার নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় একটি পোশাককে আকর্ষণীয় করে তুলেন। ধৈর্য এবং সৃজনশীলতার পরিচয় দেন তার তৈরি বা ডিজাইন করা পোশাকে। তাই আমি এ পেশা ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়ে কাজ শুরু করি।

২০২০ সালের নভেম্বরের ৮ তারিখ অল্প কিছু পুঁজি বিনিয়োগ করে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। পুঁজি ছিল পনেরো হাজার টাকা। তা দিয়ে কাপড় কিনে এনে নিজে কাগজে কলমে ডিজাইন করে মূলত মেয়েদের পোশাক নিয়ে কাজ করছেন। এখন তার নিজস্ব কারখানাতেই তৈরি হয় সব পোশাক।

উদ্যোক্তার ৩-৪ জন কর্মী আছেন, ফ্যাক্টরি রাজধানীর বাড্ডাতে। ব্যবসা করেন অনলাইন পেইজের মাধ্যমে। দেশের ভেতর প্রতিটি বিভাগে কম-বেশি পণ্য যায় তার। মাসে ৬০ থেকে ১০০ পিস পণ্য উৎপাদন করেন তিনি। বিক্রির পরিমাণ ঠিক নেই, একেক মাসে একেকরকম।

তার পণ্যের মধ্যে রয়েছে কাফতান, মসলিনের সালোয়ার কামিজ, টু পিস, থ্রি পিস, গাউন এবং ওয়েস্টার্ন ড্রেসসহ নারীদের নানা ধরনের পোশাক যার উপর এমব্রয়ডারির কাজ নিজেই ডিজাইন করে কারিগর দিয়ে তৈরি করে নেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। নিয়ত সৎ থাকলে সৃষ্টিকর্তা তাকে সফলতার পথ দেখাবেন। ভবিষ্যতে আমার ব্র্যান্ডটি নিয়ে অনেকদূর এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশের সব জায়গায় আমার আউটলেট ছড়িয়ে দিতে চাই, পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে চাই। সে লক্ষ্যেই এখন কাজ করে যাচ্ছি ।’

তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য তার পরামর্শ: উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে গেলে অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকবে, চ্যালেঞ্জ থাকবে, কিন্তু সেটা উতরে উঠা তেমন কঠিন কিছু না। মনে সাহস রাখতে হবে। নারীদের প্রতিবন্ধকতা অনেক। একটা সময় ছিল যখন পরিবার থেকে সাপোর্ট পাওয়া যেত না। এখন সেই জায়গাটা বদলেছে। সবচেয়ে বড় কথা, সিদ্ধান্তহীনতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here