এসএমই উদ্যোক্তাদের কর্মের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ ১৬ই মার্চ থেকে শুরু হলো ৭ম জাতীয় এসএমই মেলা-২০১৯।
বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে এসএমই উদ্যোক্তাদের অবদান ও অংশগ্রহণকে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে তিনটি ক্যাটাগরিতে ৫জন নারী ও পুরুষকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার-২০১৯ এ বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। বর্ষসেরা মাইক্রো উদ্যোক্তা, নারী-তাহারিমা বেগম, পুরুষ মোঃ ওলিউল্লাহ, বর্ষসেরা মাঝারি উদ্যোক্তা নারী-সুমনা সুলতানা সাথী, পুরুষ-মহিউদ্দিন, বর্ষসেরা মাঝারী উদ্যোক্তা হন নাজমা খাতুন। বিশেষ ক্যাটাগরিতে সম্মানিত করা হয় জামালপুরের সিড়ি হস্তশিল্পের স্বত্বাধিকারী, সফল উদ্যোক্তা আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরীকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী জনাব নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন; এমপি, শিল্প প্রতিমন্ত্রী জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার; এমপি, শিল্প সচিব জনাব মোঃ আবদুল হালিম। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন জনাব কে.এম. হাবিব উল্লাহ।
শিল্পমন্ত্রী জনাব নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (এমপি) এক কোটি একুশ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশেষ করে নারীদের উজ্জীবিত করার বিষয়টি আলোকপাত করেন। নারী উদ্যোক্তাদের কর্মের প্রতি উৎসাহ প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করে শিল্প প্রতিমন্ত্রী জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, “পরিকল্পিতভাবে তারা যেন এই শিল্পকারখানা পরিচালিত করতে পারে সে বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে আমাদের সকলকে। বিনা জামানতে সরকারের পক্ষ থেকে নারী উদ্যোক্তাদের ৯শতাংশ সুদে যে ঋণ প্রদান করা হয় সে সুদ আরো কমিয়ে আনার প্রস্তাবনা খুব শীঘ্রই পেশ করা হবে”
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন জনাব কে.এম হাবিব উল্লাহ বলেন “বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৮০ভাগ মানুষ যেখানে গ্রামে থাকেন সেখানে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে আমরা আর্থিক উন্নয়ন না নিয়ে আসতে পারি তবে এদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ বা ধনী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না। প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিশেষ করে নারীদের উদ্যোক্তা করে তুলতে হবে।”
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার গ্রামকে নগরায়নের উদ্যোগকে উল্লেখ করে শিল্প প্রতিমন্ত্রী জনাব কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, “ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্পের কোনো বিকল্প নেই। কেননা এতে করেই নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং শহরের উপর চাপ কমবে।” এছাড়াও জনাব মোঃ আবদুল হালিম তার বক্তব্যে দেশ ও দেশের বাইরে বাজার সম্প্রসারণের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সবাইকে একযোগে কাজের প্রতি আহবান জানান।
এছাড়াও এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সফিকুল ইসলাম গ্রাম আর শহরের পার্থক্য কিভাবে কমিয়ে নিয়ে আসা যায়, কিভাবে উদ্যোক্তাদের বাজার সৃষ্টি করা যায় সে সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন।
মেলা চলাকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে “Non-Financial Barriers Facing the SME Women Entrepreneurs”, “Relationship Banking for Sustainable finance SME Foundation Experience”, “Intellectual Property Rights for Growth of SME’s”, “Opportunities for E-Commerce for SME’s for Bangladesh” শীর্ষক চারটি সেমিনার আয়োজন করা হবে।
এ বছর সারা দেশ থেকে ২৮০টি এসএমই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান তাদের উৎপাদিত পণ্য নিয়ে এই মেলায় অংশগ্রহন করছে। এবছর মেলায় ৬৭% নারী উদ্যোক্তা অংশগ্রহন করছে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে ১৮৮ জন নারী উদ্যোক্তা এবং ৯২ জন পুরুষ উদ্যোক্তা।
মেলায় দেশে উৎপাদিত পাটজাত পণ্য, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, চামড়াজাত সামগ্রী, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, আইটি পণ্য, প্লাস্টিক ও অন্যান্য সিনথেটিক, হস্তশিল্প, ডিজাইন ও ফ্যাশনওয়্যারসহ অন্যান্য মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের স্বদেশী পণ্য প্রদর্শিত ও বিক্রয় হচ্ছে।
বিভিন্ন স্টলের উদ্যোক্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায় এখানে কোনো বিদেশী পণ্য নয়, কেবলমাত্র দেশীয় উদ্যোক্তাদের দেশীয় কাঁচামালে তৈরী পণ্যই প্রদর্শিত হচ্ছে বলে তারা খুবই আনন্দিত। মেলা চলবে আগামী ২২ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০ টা হতে ৮ টা পর্যন্ত চলবে। মেলাটি সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা