বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, ই-কমার্সে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হলে অনলাইন পেমেন্ট, কর ও শুল্ক অবকাঠামো উপযোগী করতে হবে। 

প্রযুক্তি ভিত্তিক মডেল গুলোকে উন্নত করার মাধ্যমে ই-কমার্স সেক্টরকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে, যেন নারী উদ্যোক্তারা এর সুফল আরো বহু গুনে পেতে  পারে। নারী উদ্যোক্তাদের অনেক জটিল ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়, যা কাম্য নয়। উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরাম এ সকল সমস্যা উদ্ভাবনী উপায়ে সমাধানে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্পীকার।

স্পীকার আজ উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরামের উদ্যোগে ‘উইমেন ই-কমার্স এন্টারপ্রিনিউরশিপ সামিট (উই সামিট) ২০২০’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন।

স্পীকার বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, অপর্যাপ্ত মূলধন, লিঙ্গ বৈষম্য, জ্ঞান ও পরিচালন দক্ষতার অভাব, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সহায়তার অভাব, তথ্য প্রাপ্তি ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধায় সীমিত প্রবেশাধিকার ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে। 

ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হবার কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীদের নিজস্ব সামান্য সঞ্চয় থেকে বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু, নারীরা এ সকল চ্যালেঞ্জকে সম্ভাবনায় পরিণত করে নারীরা চ্যালেঞ্জ কে সম্ভাবনায় পরিণত করে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং নিজেদের প্রচেষ্টায় নারী উদ্যোক্তা হিসেবে যথাযোগ্য স্থান করে নিচ্ছে। নারী উদ্যোক্তারা হাল ছাড়বে না, তারা তাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখবে।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কিছু গুরুতর চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা বাসায় অবস্থান করায় নারীদের পারিবারিক দায়িত্ব বেড়ে গেছে, অনলাইন শিক্ষা পদ্ধতিতে মা হিসেবে নারীদের সহায়তা করতে হচ্ছে, নারী উদ্যোক্তাদের পূর্বে নিযুক্ত করা কর্মচারীদের বেতন ও গৃহীত ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে।

এ সকল সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা, ব্যাংকিং সহায়তা, সুদমুক্ত ঋণ সহায়তা, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত বিনা সুদে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা, যথাযথ আইন ও নীতি প্রণয়ন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বাস্তবায়িত ১০০টি অর্থনৈতিক জোনে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ প্লট বরাদ্দ প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্পীকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করে চলেছেন, যা নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাপক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে নেটওয়ার্ক ও কানেকটিভিটি উন্নত হওয়ার কারণে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী উদ্যোক্তাগন এর সুফল পাচ্ছেন।

বর্তমান যুগে অনলাইন ও ই-কমার্সের সুবাদে দেশের সীমা ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ করার সুযোগ পাচ্ছে নারী উদ্যোক্তাগন। এ সময় নারী উদ্যোক্তাদের আইসিটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো দক্ষ ও জ্ঞানী করে তোলার জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের প্রতি ব্যাপকভাবে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান স্পীকার। 

চলমান অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী করতে সরকার সব সময় নারী উদ্যোক্তাদের পাশে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে ও উই-এর সহকারী প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারজানা তানির সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বক্তব্য রাখেন। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে এসবিকে ফাউন্ডেশন ও এসবিকে টেক ভেঞ্চার্সের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির ও আহ্বায়ক হিসেবে উইমেন এন্ড ই-কমার্স ফোরামের সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা বক্তব্য রাখেন। 

অনুষ্ঠানে উই সামিটের সাথে সম্পৃক্ত সদস্যরা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here