প্রাচীন বাংলার অন্যতম গৌরব দেশের তাঁতিদের হাতে বোনা জামদানি শিল্প। আর এই জামদানি শিল্প নিয়ে কাজ করছেন মো. ইমতিয়াজ মাওলা।
ঐতিহ্যবাহী জামদানি শিল্পের ঐতিহ্য ধরে রাখতে উদ্যোক্তার গড়া ‘জামদানি স্টেশন’-এর শাড়িগুলো যাচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকা-মধ্যপ্রাচ্যের ক্রেতাদের কাছে।
দুই ভাই-বোনের মধ্যে ছোট ইমতিয়াজের গ্রামের বাড়ি রুপগঞ্জের নোয়াপাড়া গ্রামে (ঠিক জামদানি পল্লির পাশেই)। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা নোয়াপাড়াতেই। এখানে গ্রামের স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে সপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে বর্তমানেও একটা চাকরির সাথে যুক্ত আছেন।

উদ্যোক্তা হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মো ইমতিয়াজ মাওলা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘যে চাকরিতে ছিলাম সেখন থেকে যে মাসিক বেতন ভাতা পাচ্ছিলাম তা দিয়ে আমার ঠিক তেমন চলছিলো না। এর মধ্যে করোনার ধাক্কায় বেতন ও কমে যায়, তখন থেকেই আসলে চিন্তার শুরু।’
উদ্যোক্তা হওয়ার ইচ্ছা অনেক আগে থেকেই থাকলেও ইমতিয়াজ মাওলার শুরুটা হয়েছিলো ২০২০ সালে করোনাকালীন সময়ে।

কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন জানতে চাইলে উদ্যোক্তা জানান, ‘শুধু মাত্র জামদানি নিয়েই কাজ করছি। বর্তমানে আমার তাঁতি আছে আপাতত ১০ জন। তারা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’
উদ্যোগ শুরুর সময় তার হাতে পুঁজি ছিলো না বললেই চলে। একরকম বিনা পুঁজিতেই ব্যবসায় শুরু করেন উদ্যোক্তা ইমতিয়াজ।

এতো কিছু থাকতে কেনো এই পণ্য নিয়ে কাজ করছেন, জানতে চাইলে উদ্যোক্তা বলেন, ‘আসলে এটা আমাদের পারিবারিক ব্যবসায় ছিল আমার দাদাও এ ব্যবসায় করতেন অনেক আদি কাল থেকেই। উনার জামদানি শিল্পে অনেক সুনাম ও অর্জন রয়েছে। দাদার মৃত্যুর পর আমার পরিবারের কেউ আমাদের এই ঐতিহ্যবাহী আদি ব্যবসাকে ধরে রাখতে পারেনি। তাই আমি নিজে থেকে চিন্তা করলাম ব্যবসায় যদি করতে হয় তাহলে আমাদের আদি ব্যবসায় দিয়েই শুরু করবো। জামদানী স্টেশন বাংলার এই ঐতিহ্যকে লালন করছে এবং এই ঐতিহ্যের প্রসার ও প্রচার ঘটাতে কাজ করে যাচ্ছে। জামদানি স্টেশনের লক্ষ্য গুণগত মান বজায় রেখে যথাযথ ভাবে এই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বিশ্বব্যাপী দেশীয় এই শিল্পের পরিচিতি গড়ে তোলা।’

কোথায় কোথায় আপনার পণ্য বিক্রি করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমেরিকা, লন্ডন, দুবাই, ইন্ডিয়া, ইটালিসহ বিভিন্ন দেশেই পণ্য রপ্তানি করছি। তাছাড়া দেশের ভেতর প্রায় প্রতিটি জেলায় আমার পণ্য যাচ্ছে। অন-লাইনে আমার পেইজের নাম ‘জামদানি স্টেশন’। এই নামে আমার একটি শো-রুমও আছে।’
সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা, খুলনা