শুধু বাংলাদেশ নয় সমগ্র বিশ্বজুড়ে মহামারী করোনার প্রকোপে সকলেই আজ গৃহবন্দী। উদ্ভুত এই পরিস্থিতিতে সকল পেশাজীবির মতো উৎপাদন মুখী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে দেশীয় উদ্যোক্তাদের উৎপাদন ব্যহত হয়েছে। তবে এর মাঝেও কিছু উদ্যোক্তা অল্পপরিসরে চালিয়ে নিয়েছেন তাদের উদ্যোগ। এমনই একজন উদ্যোক্তা ইসরাত জাহান। মুঠোফোনে কথা হয় তার সাথে, জানতে চাওয়া হলো তার কার্যক্রম নিয়ে। সাধারণ লকডাউন শিথিলের পর বিশেষ জোন ভিত্তিক লকডাউনের আগেই তিনি সতর্কতা অবলম্বন করে স্বল্প পরিসরে শুরু করেছেন উৎপাদন।

তিনি জানান, ‘চার মাস আগে এডভান্স দিয়ে রাখা ফ্যাক্টরিতে কিছুদিন হলো শিফট করেছি। এরমধ্যেই মানবিক তাগিদ অনুভব করে নিজেই পিপিই এবং মাস্ক তৈরি করা শুরু করি। নিকটজনদের উপহার দিতে থাকি। একপর্যায়ে ১০, ১৫, ৫০, করে অর্ডার আসা শুরু করে। আলহামদুলিল্লাহ অনেক বড় বড় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে অর্ডার পেয়েছি। পরিবেশ বান্ধব মাস্ক হিসেবে জুট কটনের মাস্কও জনপ্রিয়তা পায়। জুট কটনের মাস্ক প্রোডাকশনের পাশাপাশি জুট কটনের স্লিপারের প্রোডাকশও শুরু হয়েছে। সুইডেনে ফাইনাল স্যাম্পল এবং জাপানেও স্লিপারের ফাইনাল স্যাম্পল পাঠিয়েছেন। সরকারি একটা কাজ কমপ্লিট হয়েছে। ডেলিভারি হবে আজ-কালের মধ্যে।

এছাড়াও ৫ হাজার পিস একটা অফিস ব্যাগের অর্ডার কনফার্ম করেছি। প্রতি মাসে ৫ শত পিস করে দিতে হবে। ১ হাজার পিস শপিং মলে রাখা চালের বস্তা যা দুইপাশে টান্সপারেন্ট দিয়ে তৈরি করা সেটাও মোটামুটি ফাইনাল হয়েছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন এবং কানাডার কিছু কাজ ডেভেলপ করছি”।

করোনার মাঝখানে তিনি সম্পূর্ণ নতুন একটা প্রোজেক্ট ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করেছেন। পেপার্স, ডকুমেন্টস, ডিজাইন ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদির কাজ। যা হয়তো বাংলাদেশে নতুন একটি ইতিহাস গড়তে পারে বলে উদ্যোক্তার বিশ্বাস। কারণ এই বিষয় নিয়ে আজও সেভাবে কাউকে কাজ করতে দেখা যায়নি।

এবার তিনি খুলনা ICD এর সাথে যুক্ত হয়ে “বাঘ বিধবাদের” কর্মসংস্থান এর জন্য ৭টি মেশিন এবং ৩টি নৌকার ব্যবস্থা করেছেন। প্রাকৃতিক দূর্যোগ আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষগুলোর জন্য ১০০ পরিবারের খাবার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছেন। এছাড়াও এবার তাদের জন্য কুরবানির আয়োজন করেছেন।

করোনা পরিস্থিতি ও সুন্দরবন তীরবর্তী এলাকার জনপদের পিছিয়ে পড়া মানুষদের কল্যাণে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। বিধবাদের কল্যাণে গৃহীত নানা পদক্ষেপে সবসময় পৃষ্ঠপোষকতা করা, আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রমে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে। এছাড়াও “উপকূল কিশোরী স্বাস্থ্য সুরক্ষা ক্যাম্পেইন ও স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ” চলমান কর্মসূচীতে বড় পরিসরে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন সম্মানিত উদ্যোক্তা ইসরাত জাহান। আর এরই প্রেক্ষিতে সম্প্রতি নেপাল -বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন সম্মানিত উদ্যোক্তা ইসরাত জাহান।

সেবামূলক এই কার্যক্রম গুলোতে সম্পূর্ণ সহায়তা করেছেন তার কলেজ আদমজী ক্যান্ট এর গ্রুপ “আদমজী ব্যাচ ৮৯”। এছাড়াও করোনার এই পরিস্থিতিতে যতটুকু সম্ভব বিভিন্নভাবে সহযোগিতায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন তিনি।

ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করে অনেক বছর চাকুরীর পর তিনি উদ্যোক্তার ভূবণে পদার্পণ করেন। মূলত তিনি পাট পণ্য নিয়ে কাজ করছেন। সফল এ উদ্যোক্তার ঝুলিতে রয়েছে অনেক উল্লেখযোগ্য অর্জন।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here