হাজারো দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখোর হয়ে উঠেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২০। দেশি-বিদেশি নানা পণ্যের মাঝেও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে আছে এসএমই প্যাভিলিয়ন। ২২টি স্টলের এ প্যাভিলিয়নে উদ্যোক্তাদের সৃজনশীল কর্মগুলোর মধ্যে থেকে ক্রেতারা তাদের পছন্দসই পণ্যটি খুঁজে নিচ্ছেন।

তুনাজ্জিলা স্টাইলের স্টলে উদ্যোক্তার তৈরি পোষাক, ব্যাগ সহ নানা ধরণের পণ্যের মধ্যে থেকে দর্শকদের মন কাড়ছে মসলিনের তৈরি কুর্তি ও শাড়ি। বাঙালির হারিয়ে যাওয়া এই ঐতিহ্যবাহী মসলিনকে আধুনিকতার ছোঁয়া দিয়ে পণ্যটিকে ব্যাপক জনপ্রিয় করে তুলেছেন তিনি। গুলশান পিঙ্ক সিটিতে নিজস্ব শো রুমে বিপননের ব্যবস্থা, বছরব্যাপী বিভিন্ন মেলার ব্যস্ততা ও পণ্যের চাহিদা ভালো হওয়ায় তিনি বেশ অনুপ্রাণিত। এর পাশেই ছিলেন সুদূর জামালপুরের আমলাপাড়ার এক উদ্যোক্তা। নিপুণ হাতের কাজ ও এর পেছনের গল্প শোনাচ্ছিলেন শতদল হস্তশিল্পের এই উদ্যোক্তা। তার দোকানে মেয়েদের পোশাকের আধিক্য দেখা গেলেও উনি নিজ হাতে ব্যাগ ও হাতপাখা তৈরি করে থাকেন। নিজস্ব কারখানায় প্রস্তুতকৃত এসব পণ্যের ভালো চাহিদার  কারণেই গতবারের মতো এবারের বাণিজ্য মেলাতেও তিনি অংশগ্রহণ করেছেন।

মেলায় মাটির তৈরি তৈজসের সম্ভার নিয়ে এসেছেন কে বি পটারি ইন্ডাস্ট্রিজ। মাটির তৈরি হাড়ি-পাতিল, প্লেট, গ্লাস, পেনবক্সের মতো পণ্যগুলোর উপর কারুকাজ দর্শনার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করছে। উদ্যোক্তা তার সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে একাধিকবার জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন।

বাংলা মুভি, সিরিজ ও নাটক নিয়ে এক ভিন্নধর্মী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্টেলার ডিজিটাল লিঃ এর ‘বঙ্গ’। একইসাথে লাইভ স্ট্রিমিং ছাড়াও তাদের এপের মাধ্যমে বাংলা মুভি, নাটক উপভোগ করতে পারবে দর্শকরা। সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ও নতুন এ উদ্যোগকে দর্শনার্থীরা সাদরে গ্রহণ করেছেন।

এদিকে, নতুনত্ব বুটিক্সের উদ্যোক্তা প্রায় দশ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। তার কাজের গল্পে গল্পে জানা গেল তার উদ্যোক্তা হবার পেছনের গল্প। অন্যদিকে, সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নিয়ে মেলায় এসেছেন এপি (ঢাকা) লিঃ। ১৯১২ সাল থেকে একশ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি মধু প্রক্রিয়াজাতকরণের সাথে জড়িত। নানা ধরণের ফুলের মধু, অরেঞ্জ জেলি ছাড়াও বিশেষভাবে স্থান পেয়েছে সরিষা ফুলের মধু, কালোজিরা মধু, লিচুর মধু, সুন্দরবন থেকে সংগৃহীত মধু। মেলায় চামড়াজাত পণ্যের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তার দেখা মিলল। পিপলস ফুটওয়্যার এন্ড লেদারের নারী উদ্যোক্তা জানালেন তিনি নিজেই প্রতিটি পণ্যের ডিজাইন করে থাকেন। তার কারখানায় একদল শ্রমিকদের সম্মিলিত কার্যক্রমে আজ তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী।

প্রতিবছর তিনি মেলায় অংশগ্রহণ করেন এবং বাহারি সৃজনশীল পণ্য উৎপাদন করে থাকেন। এছাড়াও এ প্যাভিলিয়নে কয়েকটি ফুড স্টলেরও দেখা পাওয়া যায়। পহেলা জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এ মেলা চলবে পুরো মাস জুড়ে। আপনার পছন্দের পণ্য কিনতে এবং এসএমই পণ্য উদ্যোক্তাদের অনুপ্রানিত করতে আজই চলে আসুন মেলার এসএমই প্যাভিলিয়নে।

মশিউর শাফী
ফিল্ড রিপোর্টার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here