সুষ্ঠু ও টেকসই শিল্পায়ন তথা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করতে নতুন নতুন ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রহণ, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি একান্তভাবে প্রয়োজন বলে মনে করেন সফল উদ্যোক্তারা। তাদের এমন পরামর্শ উজ্জ্বীবিত হন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অডিটোরিয়ামে এসএমই উদ্যোক্তাদের নিয়ে এক অনুষ্ঠানে সফল উদ্যোক্তারা এসব বলেন।
স্মার্ট লেদার প্রোডাক্টসের স্বত্বাধিকারী নারী উদ্যোক্তা মাসুদা ইয়াসমিন উর্মি (এসএমই পুরস্কার ২০১৬ মাইক্রো) বলেন, নারী হিসেবে পিছিয়ে আমি পিছিয়ে থাকি নি। অনেক নারীর কর্মসংস্হান হয়েছে আমার লেদার পণ্য তৈরীতে।
উদ্যোক্তা বলেন চায়না প্রোডাক্ট ব্যবহার না করে আমাদের দেশের লেদার পণ্য ব্যবহার করুন এতে দেশের অর্থনীতির শক্তিশালী হবে।
শতদল হস্তশিল্প বুটিকসের স্বত্বাধিকারী নারী উদ্যোক্তা মাকসুদা হাসনাত (এস এমই উদ্যোক্তা পুরস্কার ২০১৮ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা) বলেন, আমি একজন নারী হয়ে অনেক নারীর কর্মসংস্থান করছি, নারীরা এখন ঘরের দুয়ারে বসে থাকে না শতদল হস্তশিল্পে হাতে বিভিন্ন রকম পণ্য তৈরী করছে।
উদ্যোক্তা বলেন, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ও সামাজিকতা প্রতিষ্ঠার জন্য বিবেচনায় আমি সফল নয় বরং স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে গ্রামের নারী পুরুষের আর্থিক সচ্ছলতা ছাতার মধ্যে নিয়ে আসতে পারো আমার উদ্যোগের সফলতা।
এফ এম প্লাস্টিক ইন্ডাষ্টিজ লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী উদ্যোক্তা গাজী তৌহীদুর রহমান ( এসএমই পুরস্কার ২০১৮ বিজয়ী) বলেন, তার চলার পথ এতো সহজ ছিলো না, ছোট বেলা থেকে তার একটা চিন্তা ছিলো নিজের একটা আইডেন্টিটি তৈরি করতে হবে। নিজের প্রতিষ্ঠান তৈরী করতে হবে। এতে প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং নিজেও ভালো লাগবে।
নিজের ব্যবসার সাফল্য তুলে ধরেন তিনি বলেন, আমার ব্যবসায় ৩২ কোটি টাকার উপরে ইনভেস্টমেন্ট হয়েছে।তার ব্যবসা শুরু হয়েছিল মাত্র ১৫ লাখ টাকা দিয়ে।তার ব্যবসা এত বড় হওয়ার কারন, ব্যবসায় দূরদর্শিতা, ব্যবসায় কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে হবে।
সবার ধারণা প্লাস্টিক পরিবেশের জন্য খারাপ, কিন্তু আমি যে প্লাস্টিক নিয়ে কাজ করছি এগুলো পরিবেশ বান্ধব, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রোডাক্ট তৈরি করি না।
তিনি বলেন, আমাদের প্রতিটা প্রোডাক্ট রিসাইকেলবল। আমার পণ্য গুলো হলো-ডিসপোজেবল প্লাস্টিক গ্লাস,কাপ,প্লেট,ফুট ট্রে, বিস্কুট,ট্রে, বিলস্টার প্যাকেজিং।
কিউভিসি বিডি লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী উদ্যোক্তা এ টি এম সামসুজ্জামান (এসএমই পুরস্কার ২০১৬ বিজয়ী) বলেন, চার বছর ধরে রানার মোটর সাইকেলের চেইন সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছি। আরো কর্পোরেট লেভেল কোম্পানি সঙ্গে কাজ চলছে, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে হিরো হোন্ডা, বাজাজ, এবং টিভিএস এ সমস্ত কোম্পানি অলরেডি ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট বসিয়েছে এবং সরকার তাদেরকে বাধ্য করেছে দেশের উৎপাদিত পণ্য যদি ইন্টারন্যাশনালি স্ট্যান্ডার্ডের হয় তাহলে তাদেরকে এই পণ্যগুলি আমাদের কাছ থেকে কিনতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ড্রাইভ চেনের কোন ইন্ডাস্ট্রি নাই। ড্রাইভ চেইন, মোটর সাইকেল, রিক্সা, ভ্যান এ পণ্য গুলি পুরোটা যদি ইমর্পোট না করে আমরা আমাদের জায়গায় কিছু একটা করতে পারি।দেশের জন্য বুক ভরা আশা নিয়ে উদ্যোক্তা এগিয়ে চলছে ব্যবসায়। উদ্যোক্তার স্বপ্ন বাংলাদেশকে কিউ ভি সি ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উপহার দিবে।
এসময় ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন উদ্যোক্তারা।
এস এমই ফাউন্ডেশন আয়োজিত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করার জন্য শিক্ষার্থীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান উদ্যোক্তারা।
কোরবান আষাঢ়