ঢাকা হাইকোর্ট রোড সবারই কমবেশী চেনা। রোডটা ধরে দোয়েল চত্ত্বরের দিকে আসলেই চোখে পরবে রাস্তার ধারে সারিসারি ফুল গাছ। গাছগুলোর মধ্যেই দেখতে পাবেন ছোট দেহের একটা মানুষ, দেহ ছোট হলেও মনটা কিন্তু তেমন নয়।
এতোক্ষণ যার কথা বলছিলাম তার নাম আব্দুল আজিজ। গ্রামের বাড়ী মুন্সিগঞ্জ, ঢাকায় থাকেন কামরাঙ্গীর চর। দুই সন্তান বড় ছেলে সিফাত আখতার নবম শ্রেণিতে পড়েন আর মেয়ে হাবিবার বয়স মাত্র ৪বছর। স্ত্রী কল্পনা আখতার পুরোদমে একজন গৃহিণী, সন্তান এবং সংসার সামলানোর সম্পূর্ণ দ্বায়িত্ব তার।
আব্দুল আজিজ একজন উদ্যোক্তা। এ পেশায় আছেন ৩০বছরেরও অধিক সময় ধরে। আগে ঢাকা কলেজের সামনে ছিলো তার নার্সারি। খালাতো ভাইদের সাথে থেকে রপ্ত করেছেন এই গাছের ব্যবসা। তার সংরক্ষণে আছে হাজারেরও বেশী প্রজাতির গাছ এরোমেটিক জুঁই, রঙ্গন, আলম্নডা, ল্যানটেনা এসবের দাম ও চাহিদা বেশী। আজিজের কাছে ৫০থেকে ২০০০টাকার গাছ পাওয়া যায়। কখনও নিজেই চারা দেন আবার কখনও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগ্রহ করেন।
আজিজ এরমধ্যে দুইবার সিংগাপুর গিয়ে ৭বছর থেকেছেন। কিন্তু বিদেশ উদ্যোক্তা আজিজকে টানেনা, আজিজের ভালো লাগে হাইকোর্টের ছায়াঘেরা সেই রোড। সকল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে গাছেদের সাথে মিতালী। ক্রেতাদের হাতে তাদের বিভিন্ন পছন্দের চারা তুলে দিয়ে হন সন্তুষ্ট।
বৃক্ষপ্রেমী আজিজ বলেন, “গাছ নাড়তে-চাড়তে খুব ভালো লাগে। গাছের উপর পানি ঢালতেও ভালো লাগে। বাতাসে যখন পাতা,ফুল নড়ে সেটা দেখলে আমার মন ভরে যায়”। ১৮বছর সিংগাপুরে প্রবেশের কন্ট্রাক্ট থাকলেও আজিজ সে পথে আর হাঁটতে চাননা। দিন শেষে পাঁচ-সাতশো উপার্জনেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন তিনি। ঢাকার বৃক্ষহীন রাস্তায় কিছু চারা নিয়ে বসে অক্সিজেন বিলাবেন এটাই উদ্যোক্তা আব্দুল আজিজের শেষ ব্রত।
বিপ্লব আহসান