বস্তিবাসীদের হিটওয়েভ থেকে কষ্ট লাঘবে রাজশাহী মহানগরীর ৫টি ওয়ার্ডে আইএফআরসি, জার্মান রেড ক্রস ও ড্যানিশ রেড ক্রসের কারিগরি সহযোগিতা ও ডিজি ইকোর আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি পাইলট প্রোগ্র্যাম্যাটিক পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্প নিয়ে বুধবার বিকেলে নগর ভবনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও রেড ক্রিসেন্ট রাজশাহী সিটি ইউনিটের চেয়ারম্যান এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেছেন ডিজি ইকো, জার্মান রেড ক্রস ও ড্যানিশ রেড ক্রসের প্রতিনিধিদল।
মতবিনিময়কালে হিটওয়েভ থেকে স্লাম এরিয়ায় বসবাসরতদের কষ্ট লাঘবে অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্মসূচিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে আলোচনা হয়।
সভায় রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, খরাপ্রবণ এলাকা রাজশাহীর আবহাওয়া পরিবর্তনে ব্যাপক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। ড্রেনেজ ও সুয়ারেজ সিস্টেমের উন্নয়ন করা হয়েছে। পরিবেশের উন্নয়নে কোথাও কোন ফাঁকা ল্যান্ড রাখা হয়নি, সর্বত্র সবুজায়নের কাজ করা হচ্ছে। নগরীতে বিভিন্ন পুকুর সংস্কার ও উন্নয়ন করা হচ্ছে। ২২টি পুকুর সংরক্ষণে ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
মেয়র আরো বলেন, হিটওয়েভ একটি নতুন বৈশ্বিক সমস্যা। এই নিয়ে রাজশাহী নগরীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রকল্প থেকে নগরীর স্লাম এলাকার মানুষেরা উপকৃত হবেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিজি ইকো‘র হেড অফ ইউনিট সুসান মালান, ইকো বাংলাদেশের হেড অফ অফিস আনা অরলান্ডিনি, জার্মান রেড ক্রসের ডেলিগেট জলিল লোন, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাজশাহী সিটি ইউনিট সেক্রেটারি শাহীন আকতার রেনী, জার্মান রেড ক্রসের হেড অফ অফিস গৌরভ রয়, পিপিপি প্রকল্প প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর মোঃ মহিউদ্দিন, জার্মান রেড ক্রসের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার সিলভী আফরিন, ড্যানিশ রেড ক্রসের হেলথ ম্যানেজার ডা. আরিফা হাসনাত আলী, আইএফআরসি’র হেড অফ ডেলিগেশন সাঞ্জীব কুমার কাফলে, গ্রান্ট কোর্ডিনেটর আনকা জাহারিয়া, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল সুলতান আহমেদ, দুর্যোগ ও জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক এম.এ হালিম এবং ব্যবস্থাপনা পর্ষদ সদস্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী সরোয়ার জাহান।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি রাজশাহী সিটি ইউনিটের ভাইস চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজু, কমিটির সদস্য আরিফুল হক কুমার, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, প্রফেসর তানবিরুল আলম, প্রফেসর মোকবুল হোসেন এবং ডা. এফএমএ জাহিদ।
এর আগে নগরীর ২৪নং ওয়ার্ডে প্রকল্প এলাকা এবং রাজশাহী সিটি হাসপাতাল পরিদর্শন করে ডিজি ইকো, জার্মান রেড ক্রস ও ড্যানিশ রেড ক্রসের প্রতিনিধিদল। পরিদর্শনকালে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সাথে দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা ঝুঁকি, স্বাস্থ্য উন্নয়ন ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির বিভিন্ন সেবা নিয়ে মতবিনিময় করেন তারা।
উল্লেখ্য, রাজশাহী মহানগরীর ৪, ১৬, ১৮, ২৪ ও ২৮নং ওয়ার্ডে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি মূলত তিনটি স্তম্ভ বা পিলারের উপর কাজ করছে। স্তম্ভগুলো হচ্ছে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, অতিমারী ও মহামারী প্রস্তুতি ও সাড়াদান এবং কমিউনিটির অংশগ্রহণ ও জবাবদিহিতা। পিলার-১ এর মধ্যে রয়েছে বন্যা, তাপদাহ, শৈত্যপ্রবাহ, খরা, বজ্রপাত, জলাবদ্ধতা, অগ্নিকাণ্ড, ভূমিধ্বস, ভূমিকম্প, জরুরী সাড়াদান, সড়ক দূর্ঘটনা, ট্রাফিক আইন ইত্যাদি। পিলার-২ এর মধ্যে রয়েছে মহামারী ও অতিমারী সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, কোভিড-১৯, ডেংগু, ডায়রিয়া, হাম, অপুষ্টি, এইচআইভি, যক্ষাসহ বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ মোকাবেলা। এছাড়াও রোগ-প্রতিরোধ, নিরাপদ খাবার পানি, কমিউনিটি-ভিত্তিক সারভাইলেন্স, বিভিন্ন রোগবালাই মোকাবেলা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, স্বাস্থ্য ক্যাম্পেইন, মানসিক স্বাস্থ্য। পিলার-৩ এর মধ্যে রয়েছে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নাগরিককের অধিকার, কিশোর-কিশোরীর বয়ঃসন্ধিকালীন শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়ন, বৈষম্য ও নির্যাতন মোকাবেলা, সেবা ও তথ্য প্রদান ইত্যাদি।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা