কর অঞ্চল রাজশাহীর সেরা করদাতাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে নগরীর নানকিং দরবার হলের কনফারেন্স রুমে সম্মাননা তুলে দেওয়া হয়। কর অঞ্চল রাজশাহীর ৫টি জেলা ও এক সিটি কর্পোরেশন এলাকার বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ৪২ জন সর্বোচ্চ করদাতাা সম্মাননা অর্জন করেন। আয়োজনে সেরা করদাতাদের ক্রেস্ট, সম্মাননা স্মারক ও সিআইপি কার্ড তুলে দেওয়া হয়।
এবার রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও জেলা পর্যায়ে সর্বোচ্চ করদাতা, দীর্ঘদিন ধরে কর দিচ্ছেন এমন করদাতা, সর্বোচ্চ নারী করদাতা ও ৪০ বছরের কম বয়সী তরুণ করদাতা ক্যাটাগরিতে সেরার তালিকা করা হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় সেরা করদাতা হয়েছেন আবদুল আওয়াল, নাসিমুল গণি খান ও পিপলু ইসলাম। নারী ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ করদাতা হয়েছেন নূরজাহান বেগম। অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে কর প্রদানকারীর সম্মাননা পেয়েছেন হেকমত উল্লাহ ও নির্মল কর্মকার। আর তরুণ করদাতা হয়েছেন পাভেল হোসেন।
রাজশাহী জেলায় সর্বোচ্চ করদাতার সম্মাননা পেয়েছেন মো. মুখলেসুর রহমান, মো. বেলাল উদ্দিন ও কাজী মাহমুদুল হাসান। দীর্ঘদিন ধরে কর প্রদানকারী শামসুন্নাহার ইসলাম ও মোহন কুমার আগারওয়ালা। জেলায় সর্বোচ্চ করদাতা নারী শরিফা পারভীন ও তরুণ করদাতা হয়েছেন মনিরুল ইসলাম।
এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাবুল হাসনাত, শাহ্ আলমগীর ও সেলিম রেজা সর্বোচ্চ করদাতা হয়েছেন। পাবনায় তপন চৌধুরী, অঞ্জন চৌধুরী ও স্যামুয়েল এস চৌধুরী। নাটোরে ফখরুদ্দিন তুহিন, সুজিত কুমার ও আনোয়ার হোসেন এবং নওগাঁয় দ্বিজেন্দ্রনাথ ঘোষ, হারুন অর রশিদ ও খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সর্বোচ্চ করদাতার পুরস্কার পেয়েছেন।
কর অঞ্চল রাজশাহীর কর কমিশনার নূরুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) শাহীন আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কর কমিশনার শামীমুর রহমান এবং রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আয়কর প্রদানকারী ব্যক্তিরা কর দেওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল করছেন। দেশের উন্নয়নে আর্থিক জোগান দিতে বৈদেশিক নির্ভরতা কমিয়ে আনতে সহায়তা করছেন। দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে সবাইকে সঠিক সময়ে কর দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, আয়কর প্রদানকারীদের বছরে শুধু একবার সম্মানিত করলে হবে না। তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নাগরিক সুবিধা যুক্ত করতে হবে। সেরা করদাতাদের একটি কার্ড দেওয়া হয়। কিন্তু তা কোনো কাজে আসে না।
কর কমিশনার শামীমুর রহমান বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য কর প্রদানকারীদের সম্মানিত করে উৎসাহিত করা। তাদের সঙ্গে আরও বেশি মানুষ কর প্রদানে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট ইসমাইল হোসেন সিরাজী বলেন, পদ্মা সেতুর মতো একটি সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে। এ জন্য দেশের মানুষ গর্বিত। যারা কর দিয়ে যাচ্ছেন তারাও গর্বিত। তারা গর্ব নিয়ে বলতে পারেন যে ‘আমারই করের টাকায় এই পদ্মা সেতু হয়েছে।’
রাজস্ব বোর্ডের সদস্য শাহীন আক্তার বলেন, ‘অনেকেই বলেন, কর কেন দেব? কিন্তু মনে রাখতে হবে, এ দেশ আমার। আর এ জন্যই কর দিতে হবে।’ তিনি বলেন, বর্তমানে যে ট্যাক্স কার্ড দেওয়া হয়, সেখানে খুব কমসংখ্যক মানুষই বিভিন্ন সুযোগ পান। এ সুযোগ সবার জন্য নিশ্চিত করতে রাজস্ব বোর্ড একটি কমিটি করেছে। এই কার্ড দিয়ে যাতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সুবিধা পাওয়া যায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সভা হবে। এই কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। এটা শেষ পর্যায়ে আছে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা কর প্রদানকারী কয়েকজন নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট।
ডেস্ক রিপোর্ট,
উদ্যোক্তা বার্তা