বাঙালির রসনাবিলাসের নাম ইলিশ। যুগ যুগ ধরে মানুষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও বিরাট ভূমিকা রাখছে। দেশের মোট মাছ উৎপাদনের ১২.২২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে, যা একক প্রজাতি হিসেবে সর্বোচ্চ। জিডিপিতে ইলিশের অবদান এক শতাংশেরও বেশি। বিশ্বের মোট উৎপাদিত ইলিশের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি আহরিত হয়ে এদেশের নদ-নদী, মোহনা ও সাগর থেকে।
চাঁদপুর জেলার পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া তিন নদীর মোহনায় ধরা পড়ে অতুলনীয় স্বাদের ইলিশ।এখানে গড়ে উঠেছে দেশের বৃহত্তম ইলিশের বাজার। ভোর থেকেই ঘাটে ইলিশের পসরা বসে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ইলিশপ্রেমীদের কাছে খাঁটি ইলিশ পৌছে দিতে এখানকার তরুণ তরুণীরা নিচ্ছেন নানা উদ্যোগ। তাদের একজন তরুণ মাওলানা হাসান মাহমুদ।
জামিয়া ইসলামিয়া যাত্রাবাড়ি বড় মাদ্রাসা হয়ে এখন চাঁদপুর আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত আছেন ২য় বর্ষে। ঢাকায় পড়াশোনা চলাকালীন বড়ভাই অসুস্থ হওয়ায় পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খায় পরিবার। পরিচিত বড় ভাইয়ের কাছ থেকে রেডিমেড পাঞ্জাবি নিয়ে অনলাইন ও অফলাইনে ব্যবসা শুরু করে নিজেই নিজের পড়াশোনার খরচ বহন শুরু করেন।
তার কিছুদিন পরে ২০২০ সালে চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী ও বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ নিয়ে ‘হিলসা ঘরের’ যাত্রা শুরু করেন। ইলিশের পাশাপাশি রাজশাহীর বিখ্যাত আম, খাঁটি সরিষার তেল, সৌদি আরবের খেজুর ও স্থানীয় খেজুরের রস যুক্ত করেন।
উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি বলেন: আমি শুরুতে পড়াশোনার খরচ বহন করার জন্য উদ্যোগ শুরু করলেও এখন পরিবারের খরচ চালাতেও সক্ষম আমি। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করছি। উদ্যোগের শুরুতে কিছু বন্ধু ও প্রতিবেশীদের বুলিংয়ের শিকার হয়েছিলাম। তবে আমার অন্য বন্ধুদের সাপোর্টে কারও কটূক্তিকে পাত্তা দিতাম না।
এখন বাবুরহাট, হাজীগঞ্জ, বলাখাল, শাহরাস্তি, কচুয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও চাদঁপুর শহরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে তার পণ্য। দেশের পাশাপাশি দুবাই ও মালয়েশিয়াতেও তার পণ্যের ভালো কদর রয়েছে।
ভবিষ্যতে উদ্যোগকে আরও বড় করার পাশাপাশি নিজের একটা ফার্ম দিতে চান।
মাওলানা হাসান মাহমুদ মনে করেন, ধৈর্য ধারণ করে সামনের দিকে এগিয়ে গেলে, কারও কথায় কান না দিয়ে সামনে অগ্রসর হতে পারলে, হতে পারেন আপনিও একজন সফল উদ্যোক্তা।
হাবিবুর রহমান,
উদ্যোক্তা বার্তা