চাকরিতে নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগানো অনেক সময়ই সম্ভব হয় না। বাঁধা ধরা নিয়মে অনেকে মনে করেন স্বাধীনতাহীনতায় ভুগছেন। এরকম ভাবনা থেকে থেকেই চাকরির বিষয়ে অনাগ্রহী ছিলেন পরে উদ্যোক্তা হওয়া ফাহিমা তুল জান্নাত।
ছোটবেলায় মায়ের ছবি আঁকা দেখে ভালোবাসা তৈরি হয় পেইন্টিংএর উপর। সেই ভালোবাসা থেকে উচ্চতর লেখাপড়াও এ বিষয়ে। চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি থেকে চারুকলায় স্নাতকোত্তর করেছেন।
পরে যখন ‘সত্ত্বা’ নামে উদ্যোগ শুরু করলেন, মূলধন হিসেবে নিয়েছিলেন বাবার দোকানের তিনটি কাপড়। কাপড়গুলোতে পেইন্ট করে অনলাইনে শুরু হয় ‘সত্ত্বা’র পথচলা। শুরুটা শাড়ি দিয়ে হলেও পরে যোগ করেন পান্জাবি, কামিজ, ওড়না, গয়না, মাটির সরা, হারিকেনের উপর পেইন্ট ইত্যাদি।
ফাহিমা তুল জান্নাত বলেন: ‘সত্ত্বা’র শুরুটা সহজ হলেও মাঝখানে অনেক বাধা পার করতে হয়েছে। যেমন, শাড়ির ড্রয়িং, থিম রেডি করা, কালার সেট করা থেকে ছবি তোলা পর্যন্ত বিষয়গুলো বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। প্রয়োজনের তাগিদেই নানা কৌশল অ্যাপ্লাই করে মোটামুটি একটা পর্যায়ে আসতে পেরেছি।
“শুরু থেকেই যেকোন বাধাকে বাধা মনে হয়নি কারণ আমার পাশে ছায়ার মতো ছিলেন আম্মু-আব্বু। কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে পাশে থেকেছেন। স্বামী, শাশুড়ী, ভাই -বোন, বন্ধুরাও সাহস যুগিয়েছেন,” বলে তৃপ্তির সাথে জানান জান্নাত।
‘সত্ত্বা’র তেমন রেগুলার ক্লায়েন্ট না থাকলেও দেশের বিভিন্ন জেলায় শাড়ি যাচ্ছে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গা ছাড়াও ঢাকা, পাবনা, রাজশাহী ও ময়মনসিংহসহ দেশের আরও কিছু জায়গায় পণ্য সেল করেছেন। ঢাকায় সবচেয়ে বেশি গ্রাহকের মন জয় করেছে ‘সত্ত্বা’। দেশের বাইরেও গেছে জি আই পণ্য মসলিনের শাড়ি। লন্ডনের বিভিন্ন শহরে গেছে ‘সত্ত্বা’র পণ্য।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন: যেহেতু অল্প দিয়ে শুরু সেজন্য আরেকটু বেশি মূলধনের প্রয়োজন। ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য জায়গা ও দক্ষ জনশক্তিও দরকার। সফল উদ্যোক্তা কতোটুকু হতে পারবো জানি না, তবে আমি মনে করি নিজের মনোবলকে শক্ত রাখতে হবে যে আমি পারব।
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশ তাই অন্যের দিকে না তাকিয়ে থেকে বা পরনির্ভরশীল না হয়ে নিজের উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানো উচিৎ। তবে সময় দিতে হবে, ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। সাফল্য একদিনে আসে না।
হাবিবুর রহমান,
উদ্যোক্তা বার্তা