জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০’-প্রাপ্ত ২৩ প্রতিষ্ঠানকে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে একবছর মেয়াদী বিশেষ পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়েছে।
এক বছর মেয়াদী প্রিভিলেজ কার্ডটি ইস্যুর তারিখ থেকে এক বছর কার্যকর থাকবে।
প্রিভিলেজ কার্ড পাওয়া প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তারা বিশেষ কিছু সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে আছে:
■ মেয়াদকালীন সময়ে পরিচয়পত্রটি বাংলাদেশ সচিবালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে প্রবেশের জন্য প্রবেশপত্র হিসেবে গণ্য হবে;
■ বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনার আমন্ত্রণপত্র পাবেন:
■ শিল্প সংক্রান্ত কাজে ভ্রমণের সময় বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে চলমান সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার পাবেন;
■ শিল্প সংক্রান্ত কাজে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভিসার জন্য তার অনুকূলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে Letter of Introduction প্রদান করবে;
■ স্ত্রী, পুত্র, কন্যা ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধা প্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন;
■ বিমান বন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন; এবং
■ কার্ডের মেয়াদকালীন সরকার তাকে শিল্প বিষয়ক নীতি নির্ধারণী কমিটিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করবে।
উদ্যোক্তা এবং প্রতিষ্ঠানকে শিল্পখাতে অবদানের স্বীকৃতি প্রদান, প্রণোদনা সৃষ্টি ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার’ দেওয়া হয়। সাত ক্যাটাগরিতে ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয় ২০২১ সালে।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২০’ এর জন্য সাত ক্যাটাগরিতে মোট ১৯১টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্য বৃহৎ শিল্পে ৭১টি, মাঝারি শিল্পে ৪৭টি, ক্ষুদ্র শিল্পে ২৫টি, মাইক্রো শিল্পে ২১টি, হাইটেক শিল্পে ৬টি, কুটির শিল্পে ৮টি এবং হস্ত ও কারু শিল্পে ১৩টি আবেদন আসে।
বিচারকমণ্ডলীর যাচাই-বাছাইয়ে বৃহৎ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে চারটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে প্রথম স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে জজ ভূঞা টেক্সটাইল মিলস। যৌথভাবে তৃতীয় হয়েছে আদুরি অ্যাপারেলস লিমিটেড ও ইউনিভার্সাল জিন্স লিমিটেড।
মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে যৌথভাবে অকো-টেক্স লিমিটেড এবং ফরচুন সুজ লিমিটেড। দ্বিতীয় পুরস্কার পায় রহিম আফরোজ রিনিউএবল এনার্জি লিমিটেড এবং তৃতীয় মাধবদী ডাইং ফিনিশিং মিলস লিমিটেড।
ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য মনোনীত হয় তিনটি প্রতিষ্ঠান: আমান প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি, এসআর হ্যান্ডিক্র্যাফটস এবং আলীম ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। অতিক্ষুদ্র বা মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রির জন্য পুরস্কার পেয়েছে মেসার্স কারুকলা, ট্রিম টেক্স বাংলাদেশ ও জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং। হাইটেক শিল্পের জন্য তিনটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়: সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড, সুপারস্টার ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও মীর টেলিকম লিমিটেড।
এছাড়া হস্ত ও কারুশিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয় যথাক্রমে ক্লাসিকাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্ট বিডি, আয়োজন এবং সোনারগাঁ নকশিকাঁথা মহিলা উন্নয়ন সংস্থা। কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে কুমিল্লা আর্ট অ্যান্ড ক্রাফটস, রংমেলা নারী কল্যাণ সংস্থা এবং অগ্রজ পুরস্কার অর্জন করে।
পুরস্কারের প্রত্যেক ক্যাটাগরির প্রথম পুরস্কার হিসেবে তিন লাখ টাকা ও ২৫ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট দেওয়া হয়। দ্বিতীয় পুরস্কার দুই লাখ টাকা ও ২০ গ্রাম স্বর্ণখচিত ক্রেস্ট, আর তৃতীয় পুরস্কার এক লাখ টাকা ও ১৫ গ্রাম স্বর্ণ খচিত ক্রেস্ট।
বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে পুরস্কারটির প্রবর্তন করা হয়েছে। আলোকিত শিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য বহুমুখীকরণ, আমদানিবিকল্প পণ্য উৎপাদন ও শিল্প খাতে সৃজনশীলতার বিকাশে উৎসাহিত করবে এই সম্মাননা।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা