তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বা আইসিটির ব্যবহার বাড়িয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে বলে মনে করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান।
আজ বৃহস্পতিবার এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ: এসএমই প্রেক্ষিত’ ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানতম লক্ষ্য হতে হবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী সুদক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি। এজন্য এমএসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি, প্রযুক্তি আত্তীকরণ ও দক্ষতা উন্নয়ন অপরিহার্য।
মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আগামী ৩০ বছর জুড়ে তরুণ বা উৎপাদনশীল জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকবে। বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার এটাই সব থেকে বড় হাতিয়ার। জ্ঞানভিত্তিক এই শিল্প বিপ্লবে প্রাকৃতিক সম্পদের চেয়ে দক্ষ মানবসম্পদই হবে বেশি মূল্যবান।’
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ কাজে লাগাতে আইসিটি ব্যবহারের বিকল্প নেই। তাই এই বিষয়ে এসএমই উদ্যোক্তাদের সচেতন করতেই এই ওয়েবিনারের আয়োজন করেছেন এসএমই ফাউন্ডেশন।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুযায়ী, আগামী দুই দশকের মধ্যে মানবজাতির ৪৭% কা স্বয়ংক্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে হবে। ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে শ্রমনির্ভর এবং অপেক্ষাকৃত কম দক্ষতা নির্ভর চাকরি বিলুপ্ত হলেও উচ্চদক্ষতা নির্ভর যে নতুন কর্মবাজার সৃষ্টি হবে আমাদের তরুন প্রজন্মকে তার জন্য প্রস্তুত করে তোলার এখনই সেরা সময়। দক্ষ জনশক্তি প্রস্তুত করা সম্ভব হলে জনমিতিক লভ্যাংশকে কাজে লাগিয়ে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল ভোগ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যান্য অনেক দেশ থেকে অনেক বেশি উপযুক্ত।
ওয়েবিনারে ফাউন্ডেশনের বেশ কয়েকজন পর্ষদ সদস্যরা জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে প্রযুক্তির আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে পণ্য ও সেবার উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যয় অভাবনীয় হারে হ্রাস পাবে, কারণ মানুষকে সহায়তা করবে মেশিন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব বুদ্ধিবৃত্তিক হওয়ায় ব্যবসা বাণিজ্য করার সুযোগ কোনও নির্দিষ্ট ভৌগলিক স্থানে আবদ্ধ থাকবে না। বরং এটি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। পণ্য ও সেবা উৎপাদনের টুলস ব্যবহার করে কাঁচামাল, মানব সম্পদ, সময় ইত্যাদির সর্বোত্তম ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, পরিবেশ সুরক্ষাসহ সর্বোপরি সবার জন্য মানসম্মত জীবন-যাপনের ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ ব্যবসা বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টি করবে। অনগ্রসর, প্রান্তিক, বিশেষভাবে সক্ষম ও নারীদেরকে ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন টেকনোলজিতে দক্ষ করে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে।
এ ওয়েবিনারে দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রায় ৭০ জন এসএমই উদ্যোক্তা যুক্ত ছিলেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খান। ওয়েবিনারে মূল পেপার প্রেজেন্ট করেন ফাউন্ডেশনের উপব্যবস্থাপক ইঞ্জিনিয়ার তানভির ফয়সাল।
প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন এটুআই’র হাবিবুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক্স ও মেকাট্রনিক্স প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারমান ড. শামীম আহমেদ দেওয়ান এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বণিক।
উদ্যোক্তা বার্তা রিপোর্ট