দুর্গাপুর উপজেলার সাফলগাছি গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজ এবং মর্জিনা বেগমের পুত্র মোঃ গোলাম মোস্তফা। দুর্গাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, দুর্গাপুর মহাবিদ্যালয় থেকে এইচএসসি, দুর্গাপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে স্নাতক এবং এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। পরবর্তীতে পরিবারের কৃষি কাজের হাল ধরেন তিনি। বর্তমানে কৃষি কাজের পাশাপাশি একটি হাইস্কুলে শিক্ষকতা করছেন মোঃ গোলাম মোস্তফা।
ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে কৃষি কাজের হাতেখড়ি হয়েছিল। বাবার সঙ্গে সকালে-বিকালে জমিতে যেতাম, ফসলের পরিচর্যা করতেন বাবা, আর আমি কাজগুলো দেখতাম এবং বাবাকে সহযোগিতা করতাম, কথা গুলো বলছিলেন উদ্যোক্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা।
২০১০ সালে তিনি নিজ উদ্যোগে ১৫ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ চাষ শুরু করেন। উদ্যোক্তা জানান, ওই সময় পেঁয়াজ চাষে অল্প পরিমাণ পুঁজি ব্যয় হত। কেননা বীজ, সার, শ্রমিকের খরচ, পানি সেচ সহ যাবতীয় সকল খরচে কম পুঁজি লাগত, যা বর্তমানে দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে। কি ধরনের পেঁয়াজ চাষ করেন জানতে চাইলে উদ্যোক্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, পেঁয়াজের অনেক জাত থাকলেও আমি মূলত পৌলের পেঁয়াজটা নিয়ে বেশি চাষ করে থাকি। এছাড়া আমি পেঁয়াজের পাশাপাশি ধান এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য আবাদ করি। তবে আমি পেঁয়াজ এর চাষ বেশি করি।
ব্যবহারিক জীবনে পেঁয়াজের ব্যবহার নিয়ে কথা প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা, উদ্যোক্তা বার্তাকে জানান-‘দৈনন্দিন জীবনে পেঁয়াজ একটি গুরুত্বপূর্ণ মশলা। যদিও আমাদের দেশে পেঁয়াজকে আমরা মশলা এবং সবজি দুইভাবেই ব্যবহার করি। রক্ত পরিশোধন, এ্যাজমা, কোষ্ঠকাঠিন্য, চুল বৃদ্ধিতে সহায়ক ছাড়াও পেঁয়াজের অসংখ্য ভেষজ গুন রয়েছে। এছাড়াও আমার জমির মাটি বেলে দোআঁশ হওয়ায়, পেঁয়াজ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এই কারণগুলোর জন্যই আমি মূলত পেঁয়াজ চাষকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি’।
১৫ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ চাষ শুরু করলেও বর্তমানে ২ থেকে ২.৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করছেন তিনি এবং ভবিষ্যতে পেঁয়াজ চাষের পরিমাণ আরো বাড়বে বলে জানান। উদ্যোক্তার জমিতে এলাকার উপজাতীয় শ্রমিক কাজ করার সুবাদে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।
গোলাম মোস্তফা জানান, পেঁয়াজ জমি থেকে উঠানোর পর সেগুলো স্থানীয় বাজারেই বিক্রি করে থাকেন। কখনো বা বাড়িতেই পাইকাররা পেঁয়াজ কিনতে আসেন।
তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি লক্ষ্য করে উদ্যোক্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমরা কৃষি প্রধান দেশে বাস করি, চাকরি না পেলে বেকার বসে না থেকে কৃষিকাজ শুরু করেন। এতে লজ্জার কিছু নেই। বরং এটি অহংকারের। উদ্যোগ গ্রহণ করুন এবং সঠিক শ্রম দিন, সাফল্য নিজেই আপনাকে দেখা দেবে’।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা