শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ১ লাখ তরুণ ও নারী উদ্যোক্তাকে বিজনেস ইনকিউবেশন সুবিধা এবং ব্যবসা উন্নয়ন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ আইসিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি) এর সাথে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
গতকাল (১৩ ডিসেম্বর ২০২০) বিসি বোর্ডরুমে বিসিক সচিব মোঃ মফিদুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ আইসিটি ইন ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি) এর প্রধান নির্বাহী কমর্কতা মোঃ শহীদ উদ্দিন আকবর নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
এসময় বিসিক চেয়ারম্যান মোঃ মোশতাক হাসান, এনডিসি; পরিচালক (শিল্প উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) মোঃ খলিলুর রহমান; পরিচালক ( প্রকৌশল ও প্রকল্প বাস্তবায়ন) মুহাম্মদ আতাউর রহমান ছিদ্দিকী; রতন কুমার আইচ সরকার, উপ-মহাব্যবস্থাপক (উন্নয়ন); মোঃ মহি উদ্দিন , উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রযুক্তি) উপস্থিত ছিলেন।
বিসিক কার্যক্রমে তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক আধুনিক ব্যবসা উন্নয়ন সেবাসমূহ প্রবর্তনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের আরো উন্নত সেবা প্রদানের অংশ হিসাবে ইনকিউবেশন, প্রোটো-টাইপিং, কো-ওয়ার্কিং স্পেস এবং মেন্টরশিপের মত ব্যবসা সহায়তা এই চুক্তির আওতায় বিআইআইডি এর বি-ল্যাব উদ্যোগের মাধ্যমে প্রদান করা হবে।
বিআইআইডি ইনকিউবেটর পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার সকল কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে এবং বিসিক যাবতীয় লজিস্টিক ও স্থানীয় সেট আপ সমূহ ব্যবহারের সুযোগ প্রদান করবে। পাইলট ভিত্তিতে গোপালগঞ্জ এবং নরসিংদী জেলার আওতাধীন কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের এই সেবা প্রদান করা হলেও বিসিকের সকল কার্যালয়ে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা উন্নয়ন সহায়তা পাওয়া যাবে। বাংলাদেশে এই প্রথম স্থানীয় পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ইনকিউবেশন সুবিধা প্রদানের জন্য বিআইআইডি এর বি-ল্যাব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং বিসিকের সকল স্থানীয় কার্যালয়ে পর্যায়ক্রমে ইনকিউবেশন সুবিধা প্রদান করা হবে। স্থানীয় উদ্যোক্তারা যে কোন স্থান থেকে অনলাইনে ভার্চুয়াল ইনকিউবেশন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত একটি করপোরেশন। সারাদেশে কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশে একমাত্র সরকারী মূখ্য পোষক প্রতিষ্ঠান। বিসিক দেশের ৬৪টি জেলায় ৬৪টি শিল্প সহাযয়ক কেন্দ্র, ৭৬টি শিল্পনগরী, ১৫ টি দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র, একটি নকশা কেন্দ্র এবং একটি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এর মাধ্যমে উদ্যোক্তা সৃষ্টিসহ কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প রক্ষায় বিভিন্নমূখী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
বিসিকের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমগুলো হলো সম্ভাবনাময় শিল্পোদ্যোক্তা অন্বেষণ ও সহায়তা প্রদান, শিল্প স্থাপনে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ-পূর্ব ও বিনিয়োগ-উত্তর পরামর্শ প্রদান, প্রকল্প প্রোফাইল প্রণয়ন ও প্রকল্প মূল্যায়ন, শিল্পনগরী/শিল্পপার্ক স্থাপনের মাধ্যমে উন্নত শিল্পপ্লট বরাদ্দ প্রদান, উদ্যোক্তাদেরকে শিল্প স্থাপনে ঋণ সহায়তা প্রদান, দক্ষতা ও ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে প্রশিক্ষণ প্রদান, সাব- কন্ট্রাক্টিং সংযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিল্পপণ্যের নকশা উদ্ভাবন, উন্নয়ন ও বিতরণ, উদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রচার ও প্রসারে মেলার আয়োজন, লবণ উৎপাদন এবং মৌমাছি পালনে সার্বিক সহায়তা প্রদান।
এছাড়াও বিসিক ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প নিবন্ধন, ট্যাক্স, ভ্যাট, আমদানি শুল্ক কর ইত্যাদি মওকুফ ও যৌক্তিকীকরণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বরাবর সুপারিশ প্রেরণ, আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদন, শিল্পের নিবন্ধন প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে বিসিক বিভিন্নমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। এছাড়াও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিসিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিসিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। উদ্যোক্তাদের সেবা প্রদানের জন্য সারাদেশব্যাপী বিসিকের প্রাতিষ্ঠানিক নেটওয়ার্ক রয়েছে।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা