আত্রাই জেলার মধুগুরনই গ্রামের উদ্যোক্তা রাশেদা খানম। নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর চেষ্টায় ১২ বছর আগে নেয়া একটি উদ্যোগ নানান চড়াই উতরাই পেরিয়ে সফলতার সাথে পার করেছেন ১২টি বছর।
একটি পোশাক বানিয়ে যাত্রা শুরু। তখন ক্রেতাদের কাছে পরিচিতি লাভ করে পণ্য বিক্রয় করা কিংবা পণ্য সম্পর্কে ক্রেতাদের বোঝানো অত্যন্ত কষ্টকর ছিলো। গ্রামের ভাঙাচোরা রাস্তায় নানান প্রতিকূল পরিবেশে পায়ে হেঁটে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে পোশাকের অর্ডার সংগ্রহ করতেন নিজ প্রচেষ্টাতেই। তিনি হতে চেয়েছেন একজন উদ্যোক্তা, চেয়েছিলেন কর্ম প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সকল নারীদের পাশে দাঁড়াতে।
ধীরে ধীরে একজন দু’জন করে ক্রেতারা তার পণ্য কিনতে শুরু করলেন, কখনো একটি সালোয়ার কামিজ, কখনো একটি থ্রি পিস কিংবা কখনো একটি ওয়ান পিস। ডিজাইন এবং সুনিপুণ কাজের দক্ষতার কারণে মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়তে থাকলো উদ্যোক্তার নাম, আসতে শুরু করলো কাজের প্রচুর অর্ডার। ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করছেন উদ্যোক্তা রাশেদা খানমের তৈরি পোশাক। এরপর উদ্যোক্তা তৈরি করলেন বেড কাভার, শাড়ি, পাঞ্জাবিসহ আরো অনেক পণ্য। একসময় কাজের পরিধি বিস্তৃত হলো গ্রাম থেকে গ্রামে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করলেন অনেক নারীর। আজ তার দেখানো পথে এগিয়ে চলেছেন অনেক গ্রামীণ নারী। কর্মীরা ঘর, গৃহস্থালির কাজ শেষে হাতের কাজের নানান পণ্য পালা করে তৈরি করতে বসেন।
উদ্যোক্তা রাশেদা খানম ব্যবসায়ের পাশাপাশি বৃদ্ধি করতে চান দক্ষ কর্মী সংখ্যাও। কখনো থেমে থাকেন নি বিগত ১২ বছরে। ছোট্ট নৌকায় কিংবা ভ্যানে চড়ে উদ্যোক্তা গ্রামে গ্রামে তৈরি করছেন কর্মীদের লিডার। লিডাররা আজ নিভৃত গ্রামে তৈরি করছেন নানান পোষাক তাদের শতশত কর্মীকে দিয়ে। সুঁই সুতায় উঠে আসছে সফলতা, মিলছে অর্থনৈতিক মুক্তি, কমছে দারিদ্রতা আর পরনির্ভরশীলতা।
উদ্যোক্তা রাশেদা খানম মাত্র ২০০ টাকা এবং ২ জন কর্মী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। আজ ১২ বছরে তার কর্মী সংখ্যা ১০০ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে ৫০ জন কর্মী নিয়মিত এবং ৫০ জন চুক্তিভিত্তিক ভাবে কাজ করছে।