মফস্বল শহরের একটি মেয়ে । মা খালাদের থেকে দেখেই তার সেলাইয়ের কাজ শেখা। এক পর্যায়ে অবসর সময়ে মেয়েটিও বসে পড়তেন কাজে।
বিভিন্ন ধরনের ফুল ডিজাইন করলেও মেয়েটি তখনও জানতেন না এই কাজই একদিন তার জীবনের আশার আলো হয়ে দাঁড়াবে।
এসএসসি দেয়ার পর গোদাগাড়ি থেকে স্ব-পরিবারে রাজশাহীতে চলে আসে।আশপাশে ঘুরে বেশকিছু বুটিক হাউজ নজরে আসে তার। দেখলেন ছোটবেলায় যে কাজ শখের বসে করেছেন সেই কাজ দিয়েই নারীরা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। সিদ্ধান্ত নিলেন এই বুটিক শিল্প নিয়ে কাজ করে গ্রামের নারীদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবেন।
বাবাকে সিদ্ধান্তের কথা জানালে বাবা তার হাতে তুলে দিলেন ৩ লক্ষ টাকা। অনেক স্বপ্ন নিয়ে ২০০৯ সালে ৩ লক্ষ টাকা পুঁজি এবং ৫ জন কর্মী নিয়ে রাজশাহীর নতুন কলোনীতে যাত্রা শুরু করলেন ‘শিরীন বুটিক‘ এর।
টু পিস, থ্রি পিস, বিছানার চাদর, বালিশের কুশন তৈরি করা শুরু করলেন তিনি। তৈরি পণ্য ঢাকায় নিয়ে একটি দোকানে দেখাতেই দোকানমালিক ডিজাইনগুলো অনেক পছন্দ করলেন। সেখান থেকেই ৭০ পিস থ্রি পিসের এবং টু পিসের অর্ডার পেয়ে গেলেন উদ্যোক্তা মেহেরুন নেসা।
অত্যন্ত যত্নের সাথে সুনিপুণ দক্ষতায় তৈরি করে ক্রেতাকে দেয়া সময়ের আগেই পণ্য ডেলিভারি দিয়ে দিলেন। কাজের চাপ বেড়ে গেলে তার গ্রামের যেসকল নারীরা হাতের কাজে পারদর্শী ছিলেন তাদের দিয়ে কাজ করাতেন। পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে নারীদের কাজ শিখিয়ে লিডার তৈরীর মাধ্যমে কাজ তুলে আনতেন।
উদ্যোক্তা বার্তাকে মেহেরুন নেসা জানান, “আমি চাই আমার দেশের নারীরা কারো কাছে মাথানত না করুক। আত্মকর্মে বলিয়ান হয়ে অর্থ উর্পাজন করে তারা স্বাবলম্বী হোক“।
উদ্যোক্তা মেহেরুন নেসা অংশগ্রহণ করেছেন বিভিন্ন মেলায়। ২০১৮ সালে একটি শো রুম প্রতিষ্ঠা করেছেন। বর্তমানে স্থায়ী ৩০ জন এবং মাঠ পর্যায়ে ৪০০০ জন কর্মীর কর্মসংস্থান করেছেন মেহেরুন নেসা।
রাজশাহী থেকে রাইদুল ইসলাম শুভ
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা