উদ্যোক্তা ইব্রাহিম খলিল

পরিবারে কোন ছেলে সন্তান নেই অনেকগুলো বোনের পরে সে একমাত্র ভাই। তাই সকলের খুব আদরের বাবা-মা চাইলেন ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হবেন ছেলে। সে ভাবেই চলছিল সবকিছু কিন্তু বিধিবাম। হঠাৎ পারিবারে আর্থিক অসচ্ছলতা দেখা দেয়। বোনগুলোর বিয়ে হয়ে যায়, বাবার বয়স হয়েছে সাথে অসুস্থতা। সবকিছু মিলিয়ে থমকে যাওয়া।

প্রচন্ড দুশ্চিন্তা গ্রাস করে সে বুঝতে পারে তার বোধহয় আর ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা ডাক্তারি পড়া হচ্ছে না। সংসারের হাল ধরতে হবে বাবার পাশে দাঁড়াতে হবে। ইন্টারে এডমিশন নিয়েছেন কিন্তু আর পরিক্ষা দেয়া হলো না। বুক ভরা কষ্ট নিয়ে গেলেন চট্টগ্রাম।

শুরু হলো ইব্রাহিম খলিলের জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ। একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি শুরু করলেন, সেটি ২০০৪ সালের কথা। ২০০৬ সালে চলে আসলেন ঢাকা এসে শুরু করলেন এক্সট্যাসিতে ব্রাঞ্চ ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন। সেখানে কাজ করলেন প্রায় ছয় বছর। অনেকটুকুই এখন তার জানা ইব্রাহিমের। পার্টনার এবং ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিসেবে শুরু করলেন নিজস্ব একটি ব্যবসা যেখানে অর্থায়ন করলেন বাবা। সেখানেও বেশকিছুদিন ব্যবসা করলেন। তারপর মনে হলো তিনি আগের থেকেও আরো অনেক বেশি অভিজ্ঞ তাই নিলেন নতুন পদক্ষেপ। মেয়েদের ওয়ান পিস পোশাক নিয়ে নতুন উদ্যোগ ‘ইভ’ পার্টনার একজন।

প্রায় দুই বছর পার্টনারশিপে ব্যবসা পরিচালনার পর পার্টনার আলাদা হয়ে গেলেন। নিজে একাই পরিচালনা করবেন নিজের মতো করে নিজের উদ্যোগ। শুরু হলো ঠিকঠাক কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তিনি লক্ষ্য করলেন কাজগুলো পরিকল্পিতভাবে হচ্ছেনা। পণ্যের উৎপাদন ঠিক থাকলেও মার্কেটিং, সেলস ঠিকভাবে হচ্ছে না।  ঠিক এই সময়ে তার কাছের এক বড় ভাই তাকে পরামর্শ দেন বিসিক থেকে ট্রেনিং নেয়ার জন্য। তিনি ট্রেনিং নিলেন এবং সম্পূর্ণ উদ্যমে আবারও ব্যবসায় ফিরে আসলেন।

উদ্যোক্তা জানান এই ট্রেনিং তাকে সুপরিকল্পিতভাবে ব্যবসা পরিচালনার অনেকগুলো পথ বাতলে দিয়েছে। বিসিকের সদস্য উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি অনেক মেলা করার সুযোগ পান যেটা তার ব্যবসার খুব বড় একটা দিক মার্কেটিং এবং সেলের।

উদ্যোক্তা ইব্রাহিম খলিল জানান, “আগে যেমন আমার পণ্যের স্তুপ পড়ে যেত কিন্তু সেল হত না এখন তেমন নয়। বিসিকে যুক্ত হওয়ার পরে বিভিন্ন মেলা করায় আমার বিভিন্ন জেলায় বায়ার হয়েছে। সেল দিয়েই এখন সময় পাচ্ছিনা’।

উদ্যোক্তার ইব্রাহিম খলিলের এখন 10 জন কর্মী এবং বেইলি রোডে তার বড় একটা শোরুম আছে যেখানে দিনরাত তৈরি হচ্ছে মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক। ভবিষ্যতে তার ইচ্ছা তার প্রতিষ্ঠান একদিন দেশের নামকরা ব্রান্ডের পরিণত হবে। আর নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য তার পরামর্শ হাল ছেড়ে দিয়ে থেমে যাওয়া যাবেনা কৌশল পরিবর্তন করে এগিয়ে যেতে হবে।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here