গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী একটি শিল্প মৃৎশিল্প। মাটির কলস, থালা, বাসন ইত্যাদি পূর্বপুরুষেরা তাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করতেন। কালের পরিক্রমায় দস্তা, অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের তৈজসপত্রের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে মাটির বাসন-কোসন। আধুনিক যুগে মৃৎশিল্পের কদর কম হলেও তা হারাতে দিচ্ছেন না কেউ কেউ।
তাদেরই একজন ইলিয়াস হুসেন। কাজ করছেন ২০১৩ সাল থেকে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প পণ্য নিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলা একাডেমির সামনে ইলিয়াস হুসেনের ‘বিসমিল্লাহ মৃৎশিল্প’র পণ্যের সমাহার।
উদ্যোক্তা বার্তাকে তিনি জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ঢাকায় এসে দুই বছর চাকরি করার পর নিজ এলাকার লোকপ্রসিদ্ধ পণ্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা জাগে। সেই থেকেই উদ্যোগের শুরু।
‘বিসমিল্লাহ মৃৎশিল্প’র সংগ্রহে রয়েছে শতাধিক ধরনের দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্ম। এসবের মধ্যে আছে মাটির চায়ের কাপ, প্লেট, থালা, মাটির সরা, শখের হাঁড়ি, ছোট খেলনা, ফুলদানি, মোমদানি, কলমদানি, হারিকেন, পুতুল, সাইকেল, প্যাঁচা, ঘোড়া, হাতি, পাখির বাসা, খরগোশ, কচ্ছপ, ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি, বজরা নৌকা, ফলের ট্রে, চায়ের ট্রে, ওয়াল ম্যাট ও বিভিন্ন আকারের মাটির কলস। দাম ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ২,০০০ টাকা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হওয়ায় নিয়মিত-অনিয়মিত ক্রেতার ঢল থাকে প্রায় সারাদিন। ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট ও দেশের সৌখিন মানুষদের পছন্দের শীর্ষে আছে ‘বিসমিল্লাহ মৃৎশিল্পর’ পণ্য।
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন: ছোট থেকেই সবাইকে বড় হত হয়। চাকরির পেছনে না ছুটে যে কাজের প্রতি প্যাশন বেশি, তা দিয়েই পথচলা শুরু করে দেন। কোন কাজই ছোট নয়, কাজকে সম্মান করলে কাজই আপনাকে সম্মানিত করে তুলবে।
ভবিষ্যতে নিজের উদ্যোগকে আরও বড় পরিসরে সবার সামনে তুলে ধরতে চান ইলিয়াস। বিলুপ্তপ্রায় মৃৎশিল্পকে আগের মতো সবার কাছে পরিচিত করে তুলতে চান। চান দেশের বাইরেও পৌঁছে দিতে বাংলাদেশের লোকপ্রসিদ্ধ পণ্য।
হাবিবুর রহমান
উদ্যোক্তা বার্তা