‘ছোটবেলায় আত্মীয় স্বজন বা পরিবার এবং প্রতিবেশীদের কেউ আমাকে টাকা দিলে সেটা আমি কখনই নষ্ট করতাম না। জমিয়ে রাখতাম। কোন জরুরি প্রয়োজনে সেটি খরচ করতাম। এভাবেই আরো একবার আমার কাছে কিছু টাকা জমেছিল। তা দিয়ে আমি ছোট্ট পরিসরে কাজ শুরু করলাম’- এমনটিই বলছিলেন রাজশাহী নগরীর সিপাইপাড়া এলাকার আব্দুল ওয়াদুদ এবং রুসি পারভীন দম্পতির কন্যা রিফা তাবাসসুম প্রিমা।
মাধ্যমিক দিয়েছেন পিএন গার্লস স্কুল থেকে, উচ্চ মাধ্যমিক শাহমোখদুম কলেজ এবং বর্তমানে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। ‘ছোটবেলায় সবাই যখন খেলাধুলা নিয়ে ব্যাস্ত থাকত তখন আমি খেলার সঙ্গী করেছিলাম পেপার ক্রাফঠকে। আমার খুব ভালোলাগত পেপার দিয়ে নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে। সে ভালোলাগা থেকে ২০১৮-তে জমানো কিছু টাকা দিয়ে ভালোলাগার পেপার ক্রাফটকে পেশা হিসেবে বেছে নিলাম’ – রিফা তাবাসসুম তার ‘রিফাস ক্রাফট কালেকশন’র শুরুর গল্প বলছিলেন।
শুরুতে শুধু পেপার ক্রাফটিং করলেও বর্তমানে তিনি হাতে তৈরি গহনা, হ্যান্ডপেইন্ট শাড়ি, ওয়ানপিস, টুপিস ইত্যাদি তৈরী করছেন। ‘প্রিমা খুব পরিশ্রমি মেয়ে। এখনো নিজেই সবটা সামলাচ্ছে, কোন কর্মী রাখেনি। নিজের কাজ নিজে করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সে’ – এমনটি বললেন প্রিমার মা।
পরিবার এবং শিক্ষকদের থেকে সবসময় সাপোর্ট পেয়েছে প্রিমা। সামান্য পুঁজি নিয়ে নিজের পরিশ্রমে লক্ষ টাকায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। ছোটবেলার ‘নিজে উপার্জন করবো, স্বাধীনভাবে চলবো’ -এই স্বপ্নটি বাস্তবায়ন করতে পেরেছে প্রিমা। আজ সে নিজের স্বাধীন মতো চলে। পরিবারকেও প্রয়োজনে সহযোগিতা করতে পারে।
অল্প সময়েই রিফাস ক্রাফট কালেকশন বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। অনলাইনে রিফাস ক্রাফট কালেকশন নামে তার পেজ রয়েছে। সেখান থেকে তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। দেশের বাইরে মালয়েশিয়াতেও বেশ কয়েকবার তার পণ্য গেছে।
‘মনোবল থাকলে আমাদের দেশের তরুণরা অনেক দূর পৌঁছাবে এবং তরুণরা অনেক দূর পৌঁছালে দেশ আরো এগিয়ে যাবে’। তাই যতটুকুই পুঁজি থাকুক, মনোবলকে প্রধান পুঁজি করে তরুণদের সামনে এগোনোর পরামর্শ দেন তরুণ উদ্যোক্তা রিফা তাবাসসুম প্রিমা।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা