স্বপ্নের সূচনা যখন একটি উদ্যোগ

0
উদ্যোক্তা রওশন

উদ্যোক্তা রওশন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় মাস্টার্স করেছেন। কিন্তু ইচ্ছে ছিলো অন্যরকম। ছোটবেলায় সেনাবাহিনীতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। মানুষের স্বপ্ন যেহেতু ক্ষণে ক্ষণে বদলায়, তাই অনেক বছর গানের সাথে ছিলেন। ভাবলেন গান নিয়ে পড়াশোনা করবেন। পারিবারিক কারণে হয়নি। তারপর খুব ইচ্ছে ছিলো নিউজ প্রেজেন্টার হবেন। সেখান থেকেও সরে এসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দেশীয় ব্র্যান্ড-এ ১৪ বছরের সফল ক্যারিয়ার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

কিন্তু মনে শান্তি পাচ্ছিলেন না। মনে হতো এ জীবনে নিজের কোনো কিছু করা বোধ হয় আর হলো না। তাই চাকরিতে থাকার সময়েই নিজের উদ্যোগ শুরু করলেন ২০১৪ সালে। শুরুতে সেটা অফলাইনে ছিলো। বছর চারেক পর ২০১৮ সালে অনলাইনে যাত্রা শুরু করে ‘পারফেকশন অব পরিণীতা’।

পরবর্তীতে উদ্যোক্তা রওশনের অফিস তাকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করায় তাকে যে কোনো একটি বেছে নিতে বলা হয়। রওশন তার মন এবং মনের কথাকেই গুরুত্ব দেন। নিজের উদ্যোগকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে থাকেন।

উদ্যোক্তা রওশন যেহেতু একটা ব্র্যান্ড-এ ছিলেন; তাই পণ্য কেনা, উৎস এসব বিষয় নিয়ে খুব একটা ভাবতে হয়নি তাকে। নিজের অভিজ্ঞতাই তাকে সহযোগিতা করেছে। তিনি কাজ শুরু করেন মার্কেট পণ্য দিয়ে। এখন উৎপাদিত পণ্য নিয়ে কাজ করছেন।

রওশনের পণ্য তালিকায় আছে ব্লক, বাটিক, টাইডাই, ন্যাচারাল ডাই এর শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালওয়ার কামিজ, কুর্তি, ওড়না, স্যান্ডেল, মাস্ক এবং হোম অ্যাক্সেসরিজ।

তবে এতোদূর এগিয়ে আসার পথটা খুব মসৃণ ছিলো না।

উদ্যোক্তা জানান, প্রথম বাধা আসে যেখানে তিনি কাজ করতেন সেখান থেকে। সমাধান হিসেবে চাকরি ছাড়লেন। এখন তার অস্থায়ী কর্মী বেশি হওয়ায় মাঝে মাঝে কাজে অসুবিধা হয়। তাই চেষ্টা করেন বিকল্প কর্মী রাখতে যেনো কাজে বাধা না আসে।

মাঝে মাঝে মূলধন অবশ্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়, তখন তার স্বামী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

সারা বাংলাদেশে সব জায়গাতেই উদ্যোক্তা রওশনের পণ্য যায়। দেশের বাইরে কানাডা, ইতালি, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াসহ আরো কয়েকটা দেশে পণ্য যাচ্ছে তার।

উদ্যোক্তা রওশন জানান, তার পুরো পরিবার বিশেষ করে তার বাবা-মা সবসময় তাকে সহযোগিতা করেছেন। আর যিনি সব কিছুতে তাকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন তিনি তার স্বামী।

রওশনের অস্থায়ী কর্মী আছেন ২৫ থেকে ৩০ জন। তারা মজুরীভিত্তিক কাজ করেন। এছাড়া স্থায়ী কর্মী পাঁচ জন।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বুঝেছেন, পড়ালেখা শেষ করে চাকরির আশা না করে চাকরি দেবার উদ্যোগে এগিয়ে যেতে হবে। নিজেও এই স্বপ্ন নিয়ে নিজের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে চান।

তরুণ প্রজন্মের জন্য তার পরামর্শ হলো: “চাকরী করছেন যারা করুন, কিন্তু নিজের একটা ছোট্ট উদ্যোগ হলেও সেটা নিয়ে এগিয়ে যান। একদিন এই ছোট্ট উদ্যোগই অনেক বড় হবে। তখন আর চাকরি করতে হবে না।”

মাসুমা শারমিন সুমি,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here