উদ্যোক্তা - মোছা: জান্নাতুল ফেরদৌস

জন্ম রাজশাহীতে থাকেন ঢাকার মিরপুরে। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড় জান্নাতুল। স্বামী শাহনেওয়াজ পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। জান্নাতুলও করছেন চাকরি কিন্তু জান্নাতুল চান নিজের মতো করে নিজের পরিচয় তৈরী করতে তাই নানা প্রতিকূলতার মাঝে থেকেও হাল না ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

মোছা: জান্নাতুল ফেরদৌস পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগে। শুরুটা করেন শখের বশে। তেমন কিছুই জানা ছিলনা হঠাৎ করেই শুরু করলেন ব্যবসা। অনলাইন পেজ খুলে নাম দেন ‘গোধূলি ফ্যাশন’। গোধূলি লগনে মানুষের মনের সব সময় প্রত্যাশা পূরণ হয় এমনটা ধারণা জান্নাতুলের তাই নামটা গোধূলি ফ্যাশন ।

২০১৫ সালে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন। পুঁজির টাকাটা জান্নাতুলের মা দিয়েছিলেন আর তখন থেকেই জান্নাতুল একা এই যাত্রা শুরু করেন।

জান্নাতুল উদ্যোক্তা বার্তাকে জানান, গত বছর তার ফেসবুক সহ ব্যবসায়িক পেজটি হ্যাক হয়ে যায় । যেখানে ৪০ হাজার সদস্য ছিল এবং প্রচণ্ডভাবে ভেঙে পরেন জান্নাতুল । ভেবেই নিয়েছিলেন ব্যবসা করবেন না । কিন্তু পরবর্তীতে আবারও ফিরে আসলেন ব্যবসায় ।

তাই চলতি মাসে (অক্টোবর) নতুন করে শুরু করেন হোম মেইড খাবার নিয়ে কাজ ফলে জান্নাতুলের গচ্ছিত মূলধনের প্রয়োজন হচ্ছে না । ভালো অর্ডার পাচ্ছেন এবং জান্নাতুল খুবই আশাবাদী

নভেম্বর মাসে ‘গোধূলি ফ্যাশন’ পুনরায় যাত্রা শুরু করবে। পন্য স্টকের কাজও শুরু করেছেন ইতিমধ্যে এমনটাই বলছিলেন জান্নাতুল।

গোধূলি ফ্যাশনে বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে হোম মেইড খাবার এবং আগামীতে পাওয়া যাবে তাঁত, জামদানি ও বাটিকের পোশাক। নিজে রান্না করতে খুব ভালোবাসেন এই উদ্যোক্তা। তাই পোলাও, রোস্ট, রেজালা, বিরিয়ানি, কাবাব, জর্দা, পায়েস, পুডিং ও আচার নিয়ে তৈরি করেছেন তপতী’স কিচেন (Topoty’s kitchen) পরিশ্রম করতে পিছপা হননি এই নারী উদ্যোক্তা। ২০১৭ সালে অক্টোবর মাসে খুব অসুস্থ হয়ে যান উদ্যোক্তা জান্নাতুল। দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চাকরি করেছেন ই-কমার্স কোম্পানিতে টানা তিন বছর। চাকরি, ব্যবসা, পরিবার, সন্তান সব সামাল দিয়ে কাজ করেন। ক্রেতা নিয়ে আশাবাদী কারণ সব কিছু নতুন করে শুরু করেছেন। বর্তমানে একজন ডেলিভারি ম্যান আছে । প্রথমেই ধন্যবাদ দেন রাজিব আহমেদকে। কারণ রাজিব আহমেদের হাত ধরে ই-কমার্সে জান্নাতুলের পদচারণা। ই-কমার্স এসোসিয়েশন এর দায়িত্বে ছিলেন রাজিব আহমেদ ।

প্রথমে সরকারী খরচে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ হয় জান্নাতুলের। সোলজার সেভেনটি ওয়ান কোম্পানির পক্ষে প্রশিক্ষণ নেন। নারী উদ্যোক্তা বিষয়ক, ফেসবুক মার্কেটিং এর উপর, ই-কমার্স উদ্যোক্তা ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।

নতুনদের উদ্দেশ্যে শুভ কামনা জানিয়ে বলেন আপনারা যারা ই-কমার্সে ব্যবসা করতে চান আগে মার্কেট রিসার্চ করুন। ক্রেতাদের ধোঁকা দিবেন না । নিম্নমানের পণ্য দিবেন না । আপনার সামান্য লাভ সকল উদ্যোক্তার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

পুরুষ যা পারে; মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে একই কাজ একজন নারীর দ্বারাও সম্ভব। নারীদেরও এই ভাবনার পরিবর্তন জরুরী। লক্ষ্য অর্জনে দৃঢ় মনোবল আর কঠোর পরিশ্রমই সফলতা এনে দেবে। আগ্রহ ও পরিশ্রম নিঃসন্দেহে পথ তৈরী করে দেয় সব কাজের । সাফল্যের পেছনে নিজের শক্তিই বড় শক্তি যেমনটা আছে জান্নাতুলের মাঝে। ফল স্বরূপ পেছেন সম্মাননা।

 

খাদিজা খাতুন স্বপ্না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here