জান্নাত সুলতানা এমন একজন মানুষ এই দেশে সবাই যেখানে চাকরি জন্য হা-হুতাশ করে সেখানে এই জান্নাত সুলতানার নাকি চাকরিই পছন্দ না। যদিও তার পরিবারের সবাই চাকরি করতো তারপরেও পছন্দ না কারণ বাধা ধরা নিয়ম। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজে শখ করে ড্রেস তৈরি করে পরতেন। অর্থনীতিতে পড়াশোনা শেষ করেছেন। চাকরি পছন্দ না কি করবেন ব্যবসা? হ্যা ব্যবসা , এই ব্যবসা করে হয়েছেন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা জান্নাত সুলতানা।
জান্নাত শুরু করেন শখের বসে। তিন বোন, পরিচিতদের এবং আত্মীয় স্বজনের কাপড়ে ডিজাইন করে সেলাই করে দিতেন। জান্নাত সুলতানা ভাবলেন যে নিজের ডিজাইন করা ড্রেস সবাই পছন্দ করছে, তাই একটা বিজনেস করার পরিকল্পনা করলেন।
এই ভাবনা থেকে ২০০৬ সালে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে স্বামী মো. মনিরুজ্জামানের অনুপ্রেরণায় ট্রেড লাইসেন্স করে নারায়ণগঞ্জের নিজ বাড়িতে ছোট পরিসরে ব্যবসা শুরু করেন।
তবে ব্যবসার পরিসর এবং প্রচারণার জন্য ২০১৫ সালে অনলাইন পেজ খুলেন যার নাম দেন “সিজন’স বুটিকান”।
সিজন’স বুটিকান নামটা দেওয়ার কারণ হিসেবে বলেন সিজন’স মানে সব সিজনেই ক্রেতারা তাদের প্রয়োজনীয় পোশাক পাবে আর বুটিকান শব্দটা রাশিয়ান; বুটিকস টা দিতে ইচ্ছা করছিলো না তাই একটু ভিন্নতা এনে বুটিকান দেওয়া।
সিজন’স বুটিকানে পাওয়া যায় বাটিক,জামদানী, মনিপুরী, এন্ডি সিল্ক, তাতের তৈরী সব রকমের পোশাক। যার সর্বনিম্ন মূল্য ২৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য ৩৫০০ টাকা।
সিজন’স বুটিকানের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে জান্নাত সুলতানা বলেন, দেশের পাশাপাশি বাহিরের দেশেও আমাদের দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। সে লক্ষ্যেই আমি এগিয়ে যাচ্ছি।
আমাদের দেশে বাহিরের পণ্য গুলো খুব সহজেই পাওয়া যায় এবং দামেও স্বস্তা। যার কারণে দেশের কারিগর রা সেই মূল্য টা পাচ্ছে না। আমরা যারা দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করি তাদের জন্য একটা বাধা হয়ে দাঁড়ায় বলে জানান এই উদ্যোক্তা।
জান্নাত সুলতানা এমন একজন উদ্যোক্তা যিনি নিজে সাবলম্বী হয়ে চুপ করে বসে নেই তিনি ভাবেন এই দেশের নারীদের নিয়ে। তিনি মনে প্রাণে চান অন্তত ৫০ -১০০ জন নারীকে নিয়ে কাজ করতে। যারা পুরুষের পাশাপাশি জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে নিজেরা সাবলম্বী হবে। ইতিমধ্যে ২০ জন নারী কাজ করছে এই সফল নারী উদ্যোক্তার সাথে।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, ” যে যেটা করতে চাই সেইটার প্রতি নিষ্ঠা থাকতে হবে। আজ একটা করছি কাল যেন অন্যটাই না যাই। একটা জিনিস নিয়ে পরিশ্রম করে, সৎ থেকে মেধা দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে আর সব থেকে বড় কথা পরিশ্রমী হতে হবে এবং সময় দিতে হবে ব্যবসায়।”
জান্নাত সুলতানা সম্প্রতি বি’ইয়ার তরুণ উদ্যোক্তা ঈদ পণ্য মেলাতে শ্রেষ্ঠ স্টল সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি জানান তিনি শুধু বি’ইয়ার মেলা গুলোতেই উপস্থিত হন এবং বি’ইয়ার সবাই অনেক সাহায্য করে।
শ্রেষ্ঠ স্টল সম্মাননা পেয়ে এই উদ্যোক্তার মনে হয়েছে যে মেলা গুলো করা উচিত, অনুপ্রেরণা পেয়েছি।
পৃথিবীর যেকোন কাজে সফলতা বা তাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌছানোর কারণ হল জীবনের লক্ষ্য ঠিক রাখা। ফলে যারা জীবনের লক্ষ্য ঠিক রাখে এবং একটা জিনিস নিয়ে পরিশ্রম করে তারাই সলতার মুখ দেখতে পাই যার উদাহরণ জান্নাত সুলতানা।
তাই আপনি জীবনে কি অর্জন করতে চান সবার প্রথমে তা ঠিক করুন এবং সেই অনুযায়ী পরিশ্রম করুন। জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে সামনের দিকে এগিয়ে যান।সফলতা আসবেই।
খাদিজা ইসলাম স্বপ্না