নিজেকে স্বাবলম্বী করার পাশাপাশি মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যকর হোমমেড খাবার পৌঁছে দিয়ে নিজেকে পরিচিত করছেন উদ্যোক্তা রাশেদা খানম।
গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী, তবে বড় হয়েছেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে। সেনা পল্লী স্কুল থেকে এসএসসি করেছেন। এইচএসসি এবং অনার্স-মাস্টার্স আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে। মাস্টার্স পাস করার পরপরই তার ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুল ও কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন, সেখানে ১১ বছর কর্মরত ছিলেন।
রাশেদা খানম উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন: রান্না আমার শখ। এই শখটাকে কখনও পেশা হিসেবে নেবো ভাবিনি। লকডাউনের সময় আমাদের পারিবারিক ব্যবসার ফ্যাক্টরি বন্ধ রাখতে হয়েছিল, যে কারণে অনেককে চাকরি হারাতে হয়েছিল। তখন আমাদের ফ্যাক্টরির কিছু নারীর এসে বললেন রান্নার পেজ খুলে দিতে যাতে তাদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। তাদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে নিজেও শুরু করলাম। ফেসবুক পেজের নাম দিলাম ‘RK’s Cooking Studio’.
ফেসবুক পেজের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে যেসব খাবার তিনি বিক্রি করেন তার মধ্যে আছে মুঘল শাহী মোরগ পোলাও, বিফ চাপ আর দিল খুশ, পরোটা, বিফ কোফতা কারি, বিফ নেহারি, চিকেন তন্দুরি আর দিল খুশ পরোটা, জাফরানি ফিরনি, মায়া ঘাট প্লেটার ও আচার। এছাড়া ভিনদেশি সুস্বাদু খাবারের আইটেমও বিক্রি করেন তিনি।
মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে শুরু করেছিলেন। শুরুর দিকে শুধু ভারতীয় খাবার নিয়ে কাজ করতেন। বাঙালি সব আইটেম নিয়ে কাজ করছেন। ছয়জন কর্মী আছে তার, তবে ২৫০-৩০০ মানুষের জন্য খাবারের অর্ডার আসলে আরো তিনজন কাজ করেন। আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় আচার এবং আমস্বত্ত্ব রপ্তানি করছেন। ঢাকার বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় নিজের বানানো সুস্বাদু খাবার সরবরাহ করেন।
অনুপ্রেরণা কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘বাবা একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ছিলেন। ছোট বেলা থেকেই দেখতাম আব্বু দেশের বাইরেই থাকতেন বেশির ভাগ সময়। আমার মা খুব স্ট্রং এবং সিম্পল একজন মানুষ। মায়ের অল্প বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার কারণে পড়ালেখা শেষ করতে পারেননি। কিন্তু আম্মু সব সময়ই আমাদেরকে উৎসাহ দিতেন যাতে আমরা চার ভাইবোন শিক্ষিত হই। আমার এই উদ্যোগে সবচেয়ে বড় সাপোর্ট ও অনুপ্রেরণা আমার মা।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলেন, বড় একটা ক্যাটারিং সার্ভিস খোলার ইচ্ছা আছে, যাতে কয়েকশ নারীর কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করতে পারেন। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি তার প্রধান লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা রাশেদা খানম।
মেহনাজ খান
উদ্যোক্তা বার্তা