রাজ্জাকের ৭ বিঘা জমির আমবাগানে সফলতা

0
উদ্যোক্তা - আব্দুর রাজ্জাক

ফলের রাজা আম আর আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সেখানে রাস্তার দুই ধারে যত দূর চোখ যায়, কেবলই আমের বাগান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আম। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর দেশে উৎপাদিত মোট আমের সিংহভাগই উৎপাদিত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে।

কৃষি বিভাগ জানায়, বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩০ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়ই উৎপাদিত হয় প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন।

আমের রাজধানীতে যে উদ্যোক্তার জন্ম, বংশ পরম্পরায় যাদের আম চাষ হয়ে আসছে সে আম নিয়ে কাজ করবে না তা কি হয়! বলছিলাম ৭ বিঘা জমিতে আমের বাগানের সত্ত্বাধিকারী আব্দুর রাজ্জাকের কথা।

উদ্যোক্তা বার্তা’র সঙ্গে কথোপকথনে উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘আমাদের অঞ্চলে অন্য কোন আবাদ হয় না। সকলে আমচাষের সাথে কোন না কোনভাবে যুক্ত। আমার চারটি আমবাগান রয়েছে, কোনটার বয়স ২৫০ বছর আবার কোনটা ৩০ বছর। সবচেয়ে পুরাতন বাগানটি ছিল তার দাদার, বাবার বাবার আমলের। বাগানটি ১২ বিঘা জমির উপর রয়েছে এবং সেখায় ৬০ এর অধিক গাছ রয়েছে। সাড়ে তিন বিঘা জমিতে আরো একটি আমবাগান রয়েছে সেখানে ৩৭ টি গাছ রয়েছে। এছাড়াও ১০ কাঠা জমিতে তার একটি আমবাগান আছে। বাগানগুলোতে ল্যাংড়া, গোপালভোগ, মোহনভোগ, খিরসাপাত, আমরুপালি সহ অসংখ্য জাতের আম রয়েছে।’

বর্তমানে উদ্যোক্তা রাজ্জাকের চারটি আমবাগান দেখাশোনার জন্য চারজন কর্মী আছে। আম নামানোর সময় আসলে কর্মীসংখ্যা বেড়ে যায়। যে বাগানটি ২০ বছরের পুরানো সেটিকে ঘিরে অসংখ্য স্মৃতি জড়িয়ে আছে আব্দুর রাজ্জাকের।

উদ্যোক্তা জানালেন, ‘বাগানগুলো আমার নিজের সামনে গড়ে উঠেছে, প্রতিটি গাছে পানি ঢেলে বড় করেছি। শৈশব কৈশোরে বহু স্মৃতিমাখা দিন কাটিয়েছি বাগানকে ঘিরে। আগে বাগান তৈরিতে খরচ কম হলেও বর্তমানে তা বহু অংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে আমের মূল্য ঠিক থাকলেও বর্তমানে আম রপ্তানি না হওয়ার কারণে মূল্য কমে যাওয়ার পুরাতন আমবাগানিরা লোকসান গুনছেন। অনেকে পুরাতন বাগান কেটে ফেলে সেখানে অন্য ফসল করছেন।’

তবে উদ্যোক্তা আশাবাদী খুব শীঘ্রই এমন অবস্থার অবসান ঘটবে। বর্তমানে তিনি আমের রাজধানী কানসাটে একটি এবং রাজশাহীর সাধুরমোড়ে একটি মোট দুটি প্রতিষ্ঠান চালু করেছেন। অনলাইনে ‘বনলতা ফুড’ নামে একটি পেজ আছে তার। দেশের প্রতিটি জেলায় তার বনলতা ফুডের পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে। সকলকে নির্ভেজাল আম খাওয়ানোর লক্ষ্য অক্লান্ত পরিশ্রমে করে যাচ্ছেন আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, ‘আমি অনার্স, মাস্টার্স শেষ করে চাকরি তো দূরের কথা চাকুরির জন্য কখনো আবেদনই করিনি। আমি উদ্যোক্তা হবো এটিই আমার বরাবরের ইচ্ছে ছিল এবং আমি সে পথেই হেঁটেছি এবং সফলতা পেয়েছি।’

উদ্যোক্তা বললেন, নিজের সৎ ইচ্ছা আর পরিশ্রমই তার সফলতার মূল।

তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here