রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই লেকে চালু হয়েছে ‘রয়েল অ্যাডভেঞ্চার’ নামে একটি বিশাল হাউজবোট। এই বোট রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পর্যটক নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একদল তরুণ উদ্যোক্তার হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছে এই বোট সার্ভিস। এতে চড়ে হ্রদ ও পাহাড়ের রূপ উপভোগ করতে পারবেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
রাঙামাটির কাপ্তাই লেকে সম্প্রতি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য এবং রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সেলিনা আখতার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. শাওয়াল উদ্দিন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ চাকমা প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের নিয়ে কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণ করে ‘রয়েল অ্যাডভেঞ্চার’।
সেসময় প্রমোদতরীটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মো: মহিউদ্দিন মজুমদার আনন্দ, মো: মিজানুর রহমান, ফারুক আহমেদ, মো: বখতিয়ার, ইমন বড়ুয়া প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বৃষকেতু চাকমা বলেন, ‘রাঙামাটি একটি পর্যটন নগরী। এখানে হ্রদ, পাহাড়, ঝর্ণা একসঙ্গে উপভোগ করা যায়। হ্রদের বুকে এই ধরনের সুন্দর সুবিধা সম্বলিত একটি হাউস বোট পর্যটকদের দারুণভাবে আকর্ষণ করবে। পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়দের জন্য লেকে বেড়ানোর এক নতুন মাধ্যম তৈরি হয়েছে।’
বিশেষ অতিথি হাজী মো. মুছা মাতব্বর বলেন, ‘আমরা সাধারণত ভিয়েতনাম, চায়না, থাইল্যান্ড এসব দেশে এই ধরনের প্রমোদতরী দেখতে পাই। কিন্তু আমাদের দেশে রাঙামাটিতেও এই ধরনের হাউস বোট চালু হওয়ায় আমি মনে করি আমরাও ধীরে ধীরে স্মার্ট যুগে প্রবেশ করছি। এই হাউস বোটগুলো পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণ হিসেবে কাজ করবে এবং পাশাপাশি রাঙামাটির পর্যটন বিকাশে ভূমিকা রাখবে।’
দ্য রয়েল অ্যাডভেঞ্চারের সিইও মো. মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, ‘পর্যটন খাতে কাজ করার মানসিকতা থেকেই আমরা এই হাউস বোটটি তৈরি করেছি। এটি রাঙামাটির সবচেয়ে বড় হাউস বোট। এই হাউস বোটে মোট আটটি রুম রয়েছে। যার মধ্যে বারান্দাসহ দুটি সুপার প্রিমিয়াম রুম। প্রতিটি রুমের সঙ্গে ওয়াশরুম আছে। প্রতি রুমে চারজন করে থাকা যাবে। আমাদের বোটেই নিজস্ব রেস্টুরেন্ট আছে। আমরা স্থানীয় এবং ট্র্যাডিশনাল খাবার সার্ভ করার চেষ্টা করি, যাতে পর্যটকরা স্থানীয় খাবার সম্পর্কে একটা ধারণা লাভ করতে পারে।’
দ্য রয়েল অ্যাডভেঞ্চার হাউস বোটের পরিচালক মো. ফারুক বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি পর্যটকদের জন্য স্থানীয় খাবার রাখার জন্য। তবে কোনো পর্যটক চাইলে তার চাহিদামতো সব ব্যবস্থা করা যাবে। কারণ রান্নাঘর আমাদের বোটে রয়েছে।পাশাপাশি আরো সুযোগ সুবিধা রয়েছে।’
রাঙামাটিতে ছোট-বড় অনেকগুলো হাউস বোট রয়েছে। তার মধ্যে এই হাউস বোটটি আয়তনে, সুযোগ-সুবিধায় এবং সৌন্দর্যে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে আছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
বোটের মধ্যেই রিসোর্ট এর মতো সুন্দর রুমের ব্যবস্থা থাকায় রুমের ভেতর থেকেই পর্যটকরা রাঙামাটির প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো দেখতে পারবেন। আর রাঙামাটির সকল পর্যটক স্পট গুলোই কাপ্তাই লেকের তীরে হওয়ায় বোটে করেই সকল স্পট ঘুরতে পারবেন তারা। রাত্রিযাপনের সুবিধা থাকায় কোনো পর্যটককে আলাদাভাবে রিসোর্ট নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এক বোটের মধ্যেই থাকা, খাওয়া এবং ঘুমোরার সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন পর্যটকরা।
মেহনাজ খান,
উদ্যোক্তা বার্তা