উদ্যোক্তা- ফাহা হোসাইন

ক্লাস সেভেন থেকেই ঈদের সময় এলে চাঁদ রাতে বসে বসে ভাজা পোড়া খাবারগুলোর আয়োজন করতেন ফাহা হোসাইন। মা প্রচন্ড ভালো একজন রাধুনি, খুব ভালো স্বাদের খাবার খেতে খেতেই রাধুনি হয়ে ওঠা। তাই খুব একটা শিখে পড়ে রান্নার জগতে আসতে হয়নি তাকে। পাশাপাশি, ফটোগ্রাফির প্রতি একধরণের অন্যরকম আকর্ষণ থেকে অনলাইন থেকেই ছবি সম্পর্কে এবং ক্যামেরার ম্যানুয়াল সেটিংস সম্পর্কে বিস্তারিত জানা এবং কাজ শেখা। সেখান থেকেই তার ফুড ফটোগ্রাফির কাজে মনোনিবেশ করা, তার একজন উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা।

উদ্যোক্তার তৈরি আলুর পুরি

২০১৫ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারিতে শখের বশে একটি ফেসবুক পেইজ চালু করলেন ‘ফাহা’স রান্নাঘর’ নামে। ভালো কোনো ক্যামেরা না থাকায় মোবাইলে ছবি তুলেই পেজে তার রান্না করা খাবারের ছবি ও রেসিপি পোস্ট করতে শুরু করলেন  ফাহা হোসাইন। ধীরে ধীরে তা সকলের মাঝেই খুব দ্রুত পরিচিতি পেলো। তিনি তখন থেকেই একটি ক্যামেরা এবং ল্যাপ্টপের প্রয়োজনবোধ করলেন। সেই প্রয়োজনবোধ থেকেই তিনি আউটসোর্সিং এর একটি কোম্পানিতে টুকটাক ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে অল্প অল্প করে ৩০ হাজার টাকা পুঁজি করলেন। ছোট ভাইয়ের সহযোগিতা নিয়ে জমানো পুঁজি দিয়ে সনি অ্যালফা ৩০০০ ক্যামেরা ক্রয় করে আনালেন দুবাই থেকে এবং উদ্যোক্তার কাজের জনপ্রিয়তা দেখে তার স্বামী একটি ল্যাপটপ উপহার করলেন যেনো সে খুব দ্রুত এগিয়ে যেতে সক্ষম হন তার লক্ষ্যে।

প্রন কোকোনাট কারি

ফাহা হোসাইনকে মুখোমুখি হওয়া প্রতিবন্ধকতাগুলোর সম্পর্কে উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “বিভিন্ন ম্যাগাজিন বা পত্রিকাগুলোতে যখন আমার রেসিপি প্রকাশ করতো তখন তারা তাদেরই ফটোগ্রাফারদের পাঠিয়ে খাবারগুলোর ছবি তোলার কথা বলতেন। তবে আমি নাছোড়বান্দা, শুরু থেকে আজ অবদি শতভাগ রেসিপির কাজগুলো আমার তোলা ছবিতেই ছাপা হয়েছে”।

কাজের অগ্রগতি দেখে উদ্যোক্তা তার রান্নার দক্ষতাকে আরো বৃদ্ধি করবার জন্যে বিভিন্ন দেশী-বিদেশী রেসিপির পিডিএফ ডাউনলোড করে তা প্রয়োগ করা শুরু করলেন।

চিলি মোমো স্টাফ

তিনি আরো বলেন, “গত এক বছরে অনেক গুলো কাজ টানা করেছি, এক এক দিনে ৭/৮ টা রেসিপির কাজ ও একসাথে করেছি। অনলাইনে কিংবা ঘরের ক্যালেন্ডারে আমার তোলা রেসিপির ছবিগুলো যখন দেখতে পাই তখন  পরিশ্রমের ক্লান্তিটা আর মনে থাকেনা”।

‘ফাহা’স রান্নাঘর’ ফেসবুক পেজটি বর্তমানে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের সমন্বিত পরিবার। দেশের বাইরের ফটোগ্রাফি কন্টেস্টগুলোতে অদম্য ইচ্ছা নিয়ে কাজ করছেন উদ্যোক্তা।

ক্রীমি ক্যারোট স্যুপ

ফাহা হোসাইন তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানান,  সকল পরিশ্রমকে রেস্টুরেন্টে এসেই শেষ করতে চান তিনি, যেখানে ফাহা’স রান্নাঘরের সমস্ত লোভনীয় খাবারগুলোর স্বাদ লোকজন পাবে। হয়তো একদিন পুরো বাংলাদেশে উদ্যোক্তার ‘ফাহা’স কিচেন’ রেস্তোরার শাখা গুলো সেরা রেস্তোরা গুলোর মধ্যে একটি হবে, সেই স্বপ্নের পথেই হাটছেন ফাহা হোসাইন।

 

জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here