রঙতুলিতে রিক্সা পেইন্টিং

0
উদ্যোক্তা রাইসা মানিজা আক্তার

ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন রাইসা। ইংলিশ মিডিয়ামে পড়তেন, মনোযোগটা অবশ্য কমই ছিল৷ সুযোগ পেলেই ছবি আঁকায় মগ্ন থাকতেন। ক্যারিয়ার হিসেবে শেষ পর্যন্ত পেইন্টিংকেই বেছে নিয়েছেন রাইসা মানিজা আক্তার।

ইউনিভার্সিটি অফ ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ করেন। কিন্তু সংসার-বাচ্চা সামলে তেমন কিছু করা হয় না তার। ২০১৯ সালের দিকে হঠাৎ মনে হলো, নিজের ভালো লাগা থেকে কিছু একটা করা উচিৎ। ভাবতে শুরু করলেন কী করা যায়? ডিজিটাল মার্কেটিং- এর একটি কোর্স করলেন, ফ্রিল্যান্সার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হলো না। তখন ভাবলেন নিজে যা পারি তাই দিয়ে কাজ করবেন। পেইন্টিংটা তার জানা এবং খুব শখের একটি কাজ।

তিনি খেয়াল করলেন, এখনকার রিক্সাগুলো আর আগের মতো সুন্দর নয়, রিক্সার পেইন্টিংগুলো দিনকে দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বংশানুক্রমে যারা রিক্সা পেইন্ট নিয়ে কাজ করতেন, তারা এখন আর তাদের সন্তানদের এই পেশায় আনছেন না। তখন বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতায় তিনি রিক্সা পেইন্টিং নিয়ে কাজ করার সিদ্বান্ত নিলেন। উদ্যোগের নাম দিলেন ‘আর্টজেনিক্স’।

স্বামীর অনুপ্রেরণায় উদ্যোগ শুরু হয়। উদ্যোগ শুরু করলে লেগে থাকতে হয়, পরিশ্রম না করলে সফলতা পাওয়া যায় না- স্বামীর এমন অনুপ্রেরণাই রাইসাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

হ্যান্ডিক্রাফটের বাঁশ, শো পিস, হারিকেন, কেটলি, বাঁশ পেইন্টিং, গহনা, শাড়ি, ড্রেস, হোম ডেকর নানা রকম শৌখিন জিনিসকে তিনি তার রঙতুলিতে সাজিয়ে তুলছেন। অনেকেই তাদের আত্নীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের জন্য দেশের বাইরে পাঠাচ্ছে রাইসার আর্টওয়ার্ক।

নিজের কাজকে আরো দক্ষতার সাথে ফুটিয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন কর্মশালা এবং ট্রেনিং এ অংশ নেন তিনি। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টও করেন যেন তার কাজে ভ্যারিয়েশন আসে। নিজের পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য তিনি বিভিন্ন মেলা এবং এক্সিবিশনে অংশগ্রহণ করেন।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানতে চাইলে রাইসা বলেন, “আমার একটি নিজস্ব কারখানা থাকবে, নিজস্ব সেট আপ থাকবে এবং আমি একজন হোলসেলার হিসেবে কাজ করতে চাই।”

তিনি আরো বলেন: আমরা যে কাজটাই করি না কেন, সেই কাজের প্রতি আমাদের ভালবাসা থাকতে হবে এবং জ্ঞান থাকাটা জরুরি৷ আমরা অনেকবার হোঁচট খাবো এবং সেই হোঁচট থেকেই উঠে দাঁড়াতে হবে- এই মনোবল থাকলেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।”

সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here