মোবাইল ফোন সার্ভিসিং পেশাটির মূল কাজ হলো নষ্ট ফোনটি সচল করা। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে মোবাইল ফোন একটি অপরিহার্য মাধ্যম। এই গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের বেকারত্ব, আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত সেবার মধ্য দিয়ে করোনাকালীন সময় শিক্ষা খাতেও যুগান্তকারী ভূমিকা রেখেছে। সুতরাং প্রতিনিয়ত কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে যুব সমাজকে দক্ষ কারিগর হিসেবে গড়ে তুলতে বেকার সমস্যা দূরীকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে এই সেক্টর।

গত ২০ বছরে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে পরিণত হয়েছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে বাংলাদেশে প্রায় ৫ লক্ষ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এই পেশার সঙ্গে জড়িত। প্রায় ২৫ লক্ষ লোকের জীবিকা নির্বাহ করছে এর মাধ্যমে। সৃষ্টি হচ্ছে শত শত উদ্যোক্তার। এটি একটি মেধাভিত্তিক আত্মকর্মসংস্থান অসংখ্য তরুণের মেধা ও শ্রমের বিনিময়ে মাত্র দুই দশকে এটি একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে।

নতুন সেট ক্রয় না করে প্রায় ১৫ বিলিয়ন টাকা এবং অপারেটর কল ট্যারিফ দ্বারা প্রায় ৪৫ বিলিয়ন টাকা সর্বমোট প্রায় ৬০ বিলিয়ন টাকা ক্ষতির থেকে দেশ ও দেশের মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো কে রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছে মোবাইল ফোন সার্ভিসিং পেশার উদ্যোক্তারা।

কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য মোবাইল ফোন সার্ভিসিং পেশার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকায় প্রতিনিয়ত এই সেক্টরটি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে সার্ভিসিং সেন্টার গুলোতে মোবাইলের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা না থাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও এই সেক্টরের কর্মরত পেশাজীবীদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হচ্ছে। প্রযুক্তিগতভাবে উচ্চশিক্ষিত মেধাবীদের ঘাটতি ঘটছে। প্রায় দুই যুগ ধরে মোবাইল সার্ভিসিং বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা থাকলেও এ ক্ষেত্রে যথাযথ সম্মান ও সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং নীতিমালা না থাকার কারণে বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত মোকাবেলায় পিছিয়ে আছে।

পৃথিবীতে যে সমস্ত দেশে মোবাইল সার্ভিসিং ব্যাপকভাবে হয়ে থাকে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সঠিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য না থাকার কারণে এই সেক্টরটির টেকনিশিয়ানরা দিক-নির্দেশনাহীন । প্রযুক্তিগতভাবে উচ্চ শিক্ষিত ও মেধাবী তরুণরা এই পেশায় উদ্যোক্তা হবার উৎসাহ পায় না।

এই বিশাল কর্মযজ্ঞের জন্য যে সমস্ত হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার দরকার হয় তার উৎপাদন ও ডেভলপমেন্ট আমাদের দেশে হয় না যার কারণে আমরা ইন্ডিয়া-পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম,সহ অনেক দেশ থেকে পিছিয়ে আছি। এই শিল্পটি আজ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। মোবাইল ফোন সার্ভিসিং ইঞ্জিনিয়াররা নিজেরা ঝুঁকি নিয়েই ডিভাইসগুলোকে সচল রাখতে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য অগ্রগামী সেনার মত কাজ করে যাচ্ছে ।

তাই মোবাইল ফোন সার্ভিসিং এর সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ও মোবাইল সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমএসইএবি) প্রস্তাবিত অ্যাসোসিয়েশনের অনুকূলে নিবন্ধনের জোর দাবি জানাচ্ছে উপস্থিত সংশ্লিষ্টরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন থানা, জেলা, বিভাগ, কার্যনির্বাহী ও আহ্ববায়ক কমিটির সম্মানিত সদস্যবৃন্দ এবং উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

বিপ্লব আহসান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here