মেধাসম্পদের গুরুত্ব বাড়লে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে

0

বাংলাদেশে মেধাসম্পদের অধিকারের (আইপিআর) গুরুত্ব বাড়লে দেশের বাজারে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়বে। তবে এর জন্য প্রয়োজন নানাবিধ সংস্কার ও নীতিমালা। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সক্রিয় অংশগ্রহণ। যেকোনো অভিযোগের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার এবং সক্ষমতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পাশাপাশি তাঁরা কপিরাইট আইন সংশোধনের কথা বলছেন।

২৯ নভেম্বর, রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) আয়োজিত ‘আইপিআর প্রটেকশন অ্যান্ড প্র্যাকটিস : ড্রাইভিং ইকোনমিক গ্রোথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।

এর আগে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের আমেরিকান দূতাবাসের অর্থনৈতিক বিভাগের প্রধান জোসেফ গিবলিন ও আইপি আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।

জোসেফ গিবলিন বলেন, ‘আমেরিকা মেধাসম্পদের অধিকারকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখে। আমরা মূলত চার ধরনের সম্পদের ওপর মেধাসম্পদ অধিকার দিয়ে থাকি। এর গুরুত্ব অনেক।

একটি পণ্যের ব্র্যান্ড মূলত নির্ভর করে এই মেধাসম্পদের অধিকারের ওপর। এর আর্থিক গুরুত্ব অনেক। পণ্য নকল হলে এটি যেমন দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতি করে, তেমনি সেই ব্র্যান্ডেরও ক্ষতি করে অনেক।

তিনি আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের গুরুত্ব অনেক কিন্তু যদি সঠিকভাবে মেধাসম্পদের অধিকার নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে তা ভবিষ্যতে বিপদ ডেকে আনবে।

এ সময় মূল প্রবন্ধের দ্বিতীয় অংশ উপস্থাপন করেন ও আইপি আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখনো সেভাবে মেধাসম্পদের অধিকারের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বিশেষ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছেও তেমন গুরুত্ব পায় না এই বিষয়ের অভিযোগগুলো।

হামিদুল মিসবাহ বলেন, ‘আমাদের আইন আছে কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন নেই। আর সবার আগে বাস্তবায়নের জন্য নিতে হবে যথাযথ উদ্যোগ।

তিনি আরো বলেন, ‘মেধাসম্পদের বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে; পাশাপাশি রয়েছে সক্ষমতার অভাব। এই অভাব দূর করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমসের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এ সময় তিনি কপিরাইট আইনটি বাতিল করার দাবি জানান।’

অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘মেধাসম্পদের অধিকার একটি দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা ব্যাপক। বিশেষ করে ওষুধশিল্পে এর ভূমিকা অনেক। আমরা যেহেতু ২০২৬ সালে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন করব। সেহেতু সে জায়গা থেকে আমাদের নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবনসহ মেধাসম্পদের অধিকারের ওপর বিশেষ জোর দিতে হবে।’

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, সরকার পেটেন্ট আইনসহ মেধাসম্পদের অধিকারের বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। ২০২২ সালে পাস হওয়া পেটেন্ট আইনের সংশোধনের জন্য এরই মধ্যে নানা কাজ করা হয়েছে। আগামী ১৩ নভেম্বর আইনটি সংশোধন হবে। শুধু পেটেন্ট আইন নয়, পাশাপাশি জি-আই পণ্য নিয়ে কাজ করছে শিল্প মন্ত্রণালয়।

তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান প্রেক্ষাপটে মেধাসম্পদের অধিকারের বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি কমিটি কাজ করছে। আমরা খুঁজছি আসলে মেধাসম্পদের অধিকারের চ্যালেঞ্জগুলো কোথায়। পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা নতুন পণ্য উদ্ভাবনের দিকে যাচ্ছি। যাতে করে আমরা ২০৪১ সালের লক্ষ্য উন্নত দেশে পরিণত হতে পারি।’

ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here