মা-সুলতানা নার্গিস ও মেয়ে-সামিতা মাওলা সেতু

জীবনের কর্মব্যস্ততায় সুলতানা নার্গিসের গড়া বিউটি পার্লারকে পারিবারিক প্রয়োজনে ফেণীতে ফেলে এসে ঢাকায় সেটেল হলো পরিবার। আগের পার্টনারশিপে গড়া বিউটিফিকেশন ওয়ার্ল্ডে কাজ করা আর সম্ভব হলো না। ২০১৪সাল থেকে মা বন্ধন ওমেন্স পার্লারকে নতুন করে সাজিয়ে নিলেন ঢাকায়। নিজের মতো করে কাজ করে চললেন। সাড়া মিলতে থাকলো দারুণ। মা সুলতানা নার্গিসের সাথে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়তে সামিতা মাওলা সেতু ২০১৭ সালে গড়ে তুললেন একটি ওমেন্স ইয়োগা সেন্টার। সেবাগ্রাহকদের চাহিদায় সামিতা নিজেই ইন্সট্রাক্টর সেই ইয়োগা সেন্টারের। প্রতিটি সেশনে ৪০জন সেবাগ্রাহককে নিয়ে সুন্দর সামলে নিচ্ছেন নিজের উদ্যোগকে।

২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেই বন্ধন ওমেন্স ইয়োগাকে পেশার অংশ নয় মূল পেশা হিসেবে নিয়েছেন সামিতা। অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, “পড়াশুনা তো শেষ। এবারে কী করছ সামিতা?” উত্তরে ইয়োগা সেন্টারের সত্ত্বাধিকারী শোনার পরে সবাই পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেয়- “আর কিছু করোনা?” একজীবনে চলার ক্ষেত্রে এই একটি প্রশ্নই বাধা হয়ে বারবার এসেছে। প্যাশনকে পেশা হিসেবে নেওয়ায় এধরনের প্রশ্নের উত্তর একদম ভাবায় না তাকে। উল্টো নিজের ইয়োগা সেন্টারের পাশাপাশি মায়ের পার্লারেও কাজে সহোযোগিতা করেন তিনি। সারাদিনের কর্মব্যস্ততায় সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে নারাজ সামিতা। বরং কী করে ইয়োগা সেন্টারের আরো প্রসার ঘটানো যায় এটিই তার ভাবনা জুড়ে। খুব শীঘ্রই নতুন একটি শাখার সূচনা করতে চায় “বন্ধন ওমেন্স ইয়োগা সেন্টার”। সুস্থ্যতা নারীর আভিজাত্য হোক এই মূলমন্ত্রের বিস্তৃতি একদিন আসবে।

মায়ের সাথে সখ্যতা কেবল ঘরে নয়, মা-মেয়ের সখ্যতায় গড়ে উঠা চমৎকার পার্টনারশিপে পাশাপাশি চলছে দু’টো উদ্যোগ। মা খুশী তার পুরোনো পেশায় ফিরতে পেরে আর মেয়ে খুশী নিজের উদ্যোগটি নিজে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পেরে। চাকুরী সবাই করছে আবার এর একটা সংকটও আছে বর্তমান বাজারে। বরং চাকুরীর অপেক্ষায় সময় না দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিজের আইডিয়ায় সেবা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠিত হলে তা একজন মানুষকে ইতিবাচকভাবে চলতে আরো বেশি অনুপ্রাণিত করে।

অন্য সেক্টরে কাজটা কেবল নিজকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয়। কাজ বাবদ প্রাপ্ত সম্মানী কেবল নিজেরই সুন্দর জীবন নিশ্চিত করে। বরং এই ইয়োগা সেন্টারের সুবাদে অন্যকে সুস্থ্য রাখার প্রয়াসটি নির্বিঘ্নে বাস্তবায়ন করতে পারছেন উদ্যোক্তা সামিতা। বর্তমানে আমরা সবাই রোজকার কাজে নিজেকে সুস্থ্য রাখার কথা যেখানে ভুলতে বসেছি সেখানে বন্ধন ইয়োগা সেন্টার তার সদস্যদের রোজ নিজেকে অন্তত এক ঘন্টা সময় দেবার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা দিচ্ছে। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে সামিতার প্রাপ্তি এই সেবা ও গ্রাহকদের সন্তুষ্টি।

সাদিয়া সূচনা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here