সালমান হাসান ডেভিডের নের্তৃত্বে ‘সাধারণ’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে।

সংগঠনের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপহার’ এই নামে খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সালমান ডেভিডের উদ্যোগে উলিপুর উপজেলার ১৮ টি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন, উপজেলা যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের সমন্বয়ে এই সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে যার বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার।

সাধারণের একজন নির্বাহী সদস্য জানান, অন্য সংগঠনগুলোর থেকে কিছুটা আলাদাভাবে পরিচালিত হয় এটি। প্রথমেই সংঠনের সদস্যরা নিজ নিজ এলাকায় কর্মহীন হয়ে পরা মানুষদের একটি তালিকা তৈরি করেন। পরে সরকারি সুবধাভোগী এবং সাহায্য প্রাপ্তদের তালিকার সাথে সমন্বয় করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়, যাতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সাহায্য করে।

আরেকটি টিম খাবার সামগ্রী প্যাকিংয়ের দায়িত্ব পালন করে যা প্রতিদিন সকাল থেকে ইফতারি পর্যন্ত চলে। ইফতারির পর অপর একটি টিম দায়িত্ব থাকে খাবার সামগ্রী সাধারণ মানুষের ঘরে পৌঁছানোর জন্য যা চলে সেহরির আগে পর্যন্ত। এভাবে প্রতি রাতে প্রায় ৩৫০-৪০০ পরিবারে কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছানো হচ্ছে। এছাড়া ফেসবুক অথবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে দ্রুত যাচাই করে সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে সালমান হাসান ডেভিড বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের কয়েক কোটি দুঃস্থ এবং কর্মহীন মানুষের খাবার ব্যবস্থা করতে পরিশ্রম করছেন। সেখানে আমরা অল্প কয়েক হাজার পরিবারকে তার নামে সাহায্য করতে পারাটা আমাদের কাছে অনুপ্রেরণার।’

তিনি বলেন, ‘কিছু পরিবার আছে যারা সরকারি ভাতা, রেশন ইত্যাদির অন্তর্ভুক্ত না কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য দরকার। এছাড়া মেহনতি মানুষদের আমরা প্রথমেই সাহায্য করার চেষ্টা করি। সাহায্য গ্রহণকারির সম্মতি ছাড়া তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয় না।’

ভবিষ্যত পরিকল্পনার ব্যাপারে তিনি জানান, ‘যেহেতু আমাদের প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার স্বেচ্ছাসেবী উপজেলার সব ইউনিয়নে অবস্থান করছে তাই এদের মাধ্যমে আগামী এক মাসের মধ্যে আমরা নিম্নমধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির এগার হাজার পরিবারের একটা ডাটাবেইজ প্রস্তুত করতে চাই। এই শ্রেণীর মানুষদের এখনো সাহায্যের প্রয়োজন না হলেও, বর্তমান পরিস্থিতি চলমান থাকলে অদূর ভবিষ্যতে তারা সংকটে পরতে পারেন।’

ভবিষ্যতের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সালমান বলেন: ‘আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাব। আমাদের সংগঠনের নিয়ম হলো কারও কাছে সাহায্য না চাওয়া। কিন্তু কেউ স্বেচ্ছায় সাহায্য করতে চাইলে গ্রহণ করব এবং সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রাখতে উলিপুর উপজেলা প্রশাসককে সভাপতি, আমাকে সদস্য সচিব এবং উপজেলা বণিক সমিতির একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি তহবিল তৈরির কার্যক্রম চলছে।’

সালমান বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি ছাত্রজীবনে কানাডা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর লেখাপড়া করেছেন যুক্তরাজ্য এবং কানাডায় । চাকরি করতেন জার্মানির মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে(DLR)।

তিনি কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনের পুত্র এবং রেলমন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম সুজনের জামাতা। সালমানের মা অধ্যক্ষ নাসিমা বানু কুড়িগ্রামের একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন যিনি ২০১৫ সালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here