নিজ কারখানায় উদ্যোক্তা

ছোটবেলায় স্কুলে পড়াকালীন সময় থেকেই শুরু হয় নাজমা মাসুদের হাতের কাজ শেখা। ইন্টারমিডিয়েটে পড়াকালীন সময় মাত্র ৫ হাজার টাকার পুঁজি নিয়ে পোশাক বানানো শুরু। মনে অনেক বড় স্বপ্ন, উদ্যোক্তা হবেন। পড়াশোনা শেষ করেই আর্মিতে চাকুরীরত নাজমা একটি বুটিক শপ দিলেন নিজের বাসাতেই।

পরে ‘নন্দিনি ফ্যাশন’ নামের একটি শো রুম হলো। নুরজাহান রোডে সেই ফ্যাশন বুটিক হাউজেই একটি বিউটি পার্লার খুললেন, মুন বিউটি পার্লার। ভীষণ সাড়া মিলল এবং ব্যবসায়ের পরিসর আরো বিস্তৃত হলো।

উদ্যোক্তার হাতের কাজের পণ্য

উদ্যোক্তা নাজমা মাসুদ উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “ ছোটবেলায় আমি আমার বাবা-মা কে হারিয়েছি। তখন থেকেই আমার ইচ্ছে ছিলো আমি নিজে কিছু একটা করবো, আমার নিজস্ব একটা প্রতিষ্ঠান হবে। আর সেই ইচ্ছে থেকেই মনে হয়, আজ আমার এপর্যায়ে আসা”।

জীবন সঙ্গী জনাব মোঃ মাসুদ হাসান, ভীষণ উৎসাহ নিয়ে পাশে দাঁড়ালেন। দেশের বাইরে ইউএসএ, কানাডা, লন্ডন, নিউজিল্যান্ড ও হংকং এসমস্ত দেশেগুলোর মেলায় এবং বিদেশে বসবাসরত বাঙালি পরিবারের কাছে পোষাক পাঠাতে শুরু করলেন উদ্যোক্তা নাজমা মাসুদ।  পরপর বেশ কয়েকবার বেস্ট অ্যাওয়ার্ড মিলেছে ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতায়।

নাজমা মাসুদ বলেন, “প্রথম যখন ৫ হাজার টাকায় ব্যবসাটা শুরু করি তখন প্রথমবারেই আমার ব্যবসার লস হয়ে যায়। ভেবেছিলাম আমার দ্বারা বোধহয় ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব হবে না। আমার স্বামী আমাকে উৎসাহ দিলেন, বললেন আবার শুরু করার জন্য। স্বামীর উৎসাহ পেয়ে ১০টি ড্রেস নিয়ে আমি ব্যবসাটি আবার শুরু করলাম। শুরু হলো আমার ১০ হাজার টাকার নতুন প্রোজেক্ট”।
তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশে অনেক নারী উদ্যোক্তা আছেন, নারীরা যদি নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলে তবে আমাদের দেশটা আরো বেশি উন্নত হবে।

কারখানায় কর্মরত কর্মী এবং উদ্যোক্তা

২০১৬ সালে নাজমা মাসুদ গড়ে তুললেন ‘ওয়ান পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড’, প্রায় ৫০ জন কর্মীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলো সেখানে, সকল আধুনিক মেশিন দিয়ে প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রি তৈরি করে শক্ত হাতে হাল ধরলেন উদ্যোক্তা। কর্মরত কর্মীদের কাজ, খাবার, সময়, স্বাস্থ্য  এবং ফ্যাক্টরির সকল কিছুর যত্ন করেন তিনি পরম মমতায়।
মাত্র ২ বছরেই উদ্যোক্তার পরম যত্নে এবং পরিশ্রমে প্যাকেজিং কোম্পানির উৎপাদিত কার্টন এবং এর গুণগত মানের কথা ছড়িয়ে যায় সবার কাছে। ক্লায়েন্ট লিস্টে একে একে যোগ হলো বড় বড় প্রায় ১৫ টি প্রতিষ্ঠান এবং ছোট ছোট অনেক প্রতিষ্ঠান। তিনি এগিয়ে যেতে থাকলেন দুর্বার গতিতে।

উদ্যোক্তা এবং তার কর্মীগণ

৪৫ জন নারী উদ্যোক্তাকে নিয়ে গড়ে ফেললেন ‘উইমেন্স এমপাওয়ারমেন্ট অর্গানাইজেশন’। এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে অনেক বড় করে মেলার আয়োজন করেন উদ্যোক্তাদের নিয়ে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here