বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যময় কুটির শিল্প বেত।গৃহস্থালিতে বেতের ব্যবহার বহুবিধ। গৃহ নির্মাণে যেমন বেতের প্রয়োজন, তেমনি শৌখিন সজ্জাতেও বেতের কদর রয়েছে।
৬৫ বছর আগে ৭০০ টাকা পুঁজি নিয়ে বেতশিল্পের কাজ শুরু করেছিলেন উদ্যোক্তা মো. ফরিদুর রহমান। বেতের মোড়া, বিভিন্ন সাইজের দোলনা, রকিং চেয়ার, কাঠা, ফুলদানি, লাটাইসহ ১৫/২০ ধরনের বেত পণ্য তৈরি করছেন এই উদ্যোক্তা।
রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর সংলগ্ন হোসেনিগঞ্জ বেতপট্টি এলাকায় উদ্যোক্তা মো. ফরিদুর রহমানের প্রতিষ্ঠান ‘বেত বিপণী’ অবস্থিত।
এখানে ৭০ টাকার মিনি কাঠাও যেমন পাওয়া যায় তেমনি ২/৩ হাজার টাকার রকিং চেয়ার,বড় দোলনার ও দেখা মিলে।ছোট বাচ্চাদের নজর কাড়তে বেত বিপণীতে সম্প্রতি লাটাইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন রঙিন ঘুড়ির ও ব্যবস্থা করেছেন এই উদ্যোক্তা।
বর্তমানে ছেলে মো. মাহবুবুর রহমান ডন বাবার সাথে বেত বিপণীর দেখাশোনা করে থাকেন।
পণ্যগুলো তৈরিতে কি ধরনের বেত ব্যবহার করে থাকেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে উদ্যোক্তা মো. ফরিদুর রহমান বলেন ‘ভিন্ন ভিন্ন কাজে ভিন্ন ধরনের বেত ব্যবহৃত হয়। বেতশিল্পে সাধারণত জালি ও গোল্লা বেত ব্যবহার করা হয়। প্রধানত বুনন ও বাঁধানোর কাজে বেত ব্যবহৃত হয়। নকশার ধরন বুঝে সরু ও মোটা বেতের বিভিন্ন ধরনের অংশ তুলে নিতে হয়। জালি বেত দিয়ে চেয়ার, টেবিল, দোলনা, বাস্কেট, মহিলাদের ব্যাগ ও বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী তৈরি হয়।গোল্লা বেত ব্যবহার হয় নিত্য ব্যবহার্য আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী তৈরির কাঠামোতে।
বেত সংগ্রহের ব্যাপারে উদ্যোক্তা মো. ফরিদুর রহমান বলেন ‘আমরা মূলত সিলেট থেকে বেত সংগ্রহ করি। বর্তমান সময়ে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা থাকলেও ১৯৫৬ সালে যখন আমি শুরু করেছিলাম তখন একটু কষ্টকর ছিল।আমার জন্ম যেহেতু সিলেটে ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত সেখানেই বেড়ে উঠেছি তাই বেত সংগ্রহের ব্যাপারে কখনো অসুবিধায় পড়তে হয়নি।
প্রথমদিকে ৫ জন কর্মী থাকলেও বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জন্য ২ জন কর্মী রয়েছে বেত বিপণীতে।সারা দেশেই বেত বিপণীর পণ্য যাচ্ছে।করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে আবারো অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন বলে আশা ব্যক্ত করেছেন এই উদ্যোক্তা।
তামান্না ইমাম
উদ্যোক্তা বার্তা, রাজশাহী