বাবার ডায়াবেটিস ছিল। ভুল চিকিৎসার কারণে চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। আগে হালকা দেখতে পেতেন কিন্তু লেন্স লাগানোর পর আর দেখতেই পান না। তার দুই চোখই এখন নষ্ট হয়ে গেছে। মা একজন গৃহিনী। তিন বোন আর এক ভাই নিয়ে সংসার উদ্যোক্তা সায়েমা আফরোজ বৃষ্টির।
বসে থাকতে তার ভাল লাগে না মোটেও। তাই অনার্স প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত অবস্থায় একটা কিন্ডারগার্টেন-এ চাকরি করেছেন ৩ বছর। করোনা মহামারির সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। অনেকে উদ্যোক্তা হন শখের বসে। কিন্তু তিনি উদ্যোক্তা হয়েছিলেন নিজ প্রয়োজনে। জীবনে কিছু একটা করতে হবে এই আকাঙ্ক্ষা থেকেই তার উদ্যোক্তা হওয়া।
প্রথমত কোন পুঁজি ছাড়াই শুরু করেছিলেন নিজ উদ্যোগ। তারপর আম্মুর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ধার করে নিজের উদ্যোগটা বড় পরিসরে শুরু করেন। বর্তমানে তিনি কাজ করছেন সকল প্রকার হ্যান্ড পেইন্ট পণ্য, আম্মুর বানানো উলের পাপোশ ও নিজ জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য তুলশীমালা চাল নিয়ে। তার সিগনেচার পণ্য থিম ড্রেস।
অনলাইনে তার পেজের নাম ‘বৃষ্টি কালেকশন্স’। নাম টা কালেকশন্স হলেও এখানে সব কিছুই ক্রিয়েশন। কোনো কর্মী নেই আপাতত। সব কাজ নিজের পিরিবারের সদস্যরা মিলেই করেন। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৬টা দেশে তার পণ্য গিয়েছে। মালেশিয়া, সৌদি আরব, আমেরিকা (২ বার), কাতার, জাপান, অস্ট্রেলিয়া। সকল বিদেশী ক্রেতাই ছিল তার নিজের ক্রিয়েশন হ্যান্ড পেইন্ট-এর। দেশের প্রায় ৬২ জেলায় নিজ পণ্য পৌঁছে দিয়েছেন উদ্যোক্তা বৃষ্টি। সবচেয়ে বেশি গিয়েছে ঢাকা আর চট্টগ্রাম। একেক মাসে একেক রকম পণ্য উৎপাদন হয়ে থাকে। কোন মাসে সেল কম কোন মাসে সেল বেশি।
নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে উদ্যোক্তা বলেন, ‘উদ্যোক্তা হয়েছি নিজের পায়ের নিচের মাটিটা শক্ত করার জন্য। পরিবারের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়ানোর জন্য। যেনো মা বাবার কাঁধে কখনো বোঝা না হয়। নিজের একটা পরিচিতি তৈরি করার জন্য। আমার স্বপ্ন ভবিষ্যতে বৃষ্টি কালেকশন্সের অধীনে অনেক কর্মী কাজ করবে। নিজের কর্মসংস্থান-এর সাথে আরো ২০ জন নারীর কর্মসংস্থান করতে চাই।’
সাইদ হাফিজ,
উদ্যোক্তা বার্তা