বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এমপি বলেছেন, ‘দেশের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য অনেক উন্নত মানের এবং বিশ্বব বাজারে এ সকল পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে। সম্ভাবনাময় সিরামিক পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি করতে সরকার সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের রপ্তানির ৮২ ভাগের বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। এ খাতকে বর্তমান অবস্থানে আসতে অনেক প্রতিকুল পরিবেশ অতিক্রম করে আসতে হয়েছে। রপ্তানি একটি খাতের উপর নির্ভর করা খুবই ঝুকিপূর্ণ। তাই রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি’।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সরকার তৈরি পোশাকের পাশাপাশি সিরামিক পণ্য, পাট পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, আইসিটি পণ্য, মেডিকেল পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য এবং লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য রপ্তানির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতি বছর একটি পণ্যকে প্রোডাক্ট অফ দ্যা ইয়ার ঘোষণা দিয়ে থাকেন। এ বছর তিনি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যকে প্রোডাক্ট অফ দ্যা ইয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সিরামিক পণ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই সম্ভাবনাময়। দেশে এখন প্রায় ৭০টি প্রতিষ্ঠান সিরামিক পণ্য তৈরি করছে। দেশের অভ্যন্তরিক চাহিদা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিপুল চাহিদা মিটিয়ে সিরামিক পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এক সময় দেশের চাহিদা মিটাতে সিরামিক পণ্য ব্যাপক ভাবে আমদানি করতে হতো। এখন বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য ব্যবহার করছে। তারা বাংলাদেশের এসকল পণ্যের প্রশংসা করছে। বিশ্বে এসকল সিরামিক পণ্যের বড় বাজার রয়েছে, আমাদের এ বাজার ধরতে হবে। বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের সিরামিক পণ্য তুলে ধরতে হবে। এ জন্য যা করা প্রয়োজন সরকার তা গুরুত্বের সাথে করবে। এজন্য ব্যবসায়ী মহলকে এগিয়ে আসতে হবে। রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য করনীয় ঠিক করে, তা এগিয়ে নিতে হবে’।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ ঢাকার প্যানপ্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যান্যুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরিপ্রেক্ষিতে সিরামিক শিল্প : সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডি’র রিসার্স ডাইরেক্টর ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এলডিসি গ্রাজুয়েশন করবে ২০২৬ সালে। এর পর আরও তিন বছর এলডিসিভুক্ত দেশের বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাবে। এরপর বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করে বিশ্ববাণিজ্য করতে হবে। বিভিন্ন দেশেল সাথে এফটিএ বা পিটিএ-এর মতো চুক্তি স্বাক্ষর করে রপ্তানি বাণিজ্যে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এধরনের চুক্তি স্বাক্ষরের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। সাময়িক ভাবে আমাদের জন্য কিছু ক্ষতিকর হলেও দীর্ঘমেয়াদে আমরা এতে বেশি লাভবান হবো। এজন্য এখন থেকে আমাদের তৈরি হতে হবে। বিদেশী দক্ষ জনবলের উপর আমাদের নির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। চুক্তি সাক্ষরের জন্য ন্যাগোসিয়েশনের বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে’।
বাংলাদেশ সিরামিক ম্যান্যুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং সাবেক সংসদ সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা-এর সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান (সবিচ) মো. আফজাল হোসেন, ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান (সচিব) দুলাল কৃষ্ণ সাহা, এফবিসিসিআই-এর প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান, আইসিএমএবি’র প্রেসিডেন্ট মো. মামুনুর রশিদ।
মাসুমা শারমিন সুমি,
উদ্যোক্তা বার্তা