আমরা প্রতিদিন ময়লা ফেলে নতুন সব পাহাড়ের জন্ম দিচ্ছি। এর ফলে সৃষ্টি হচ্ছে বায়ু দূষণ ছাড়াও মহামারি সব রোগের। এই ময়লার প্রায় ৮০ শতাংশই কার্বনিক যা বাস্তুতন্ত্রকে দূষিত করছে। আজ আমাদের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও যত্ন নেওয়া প্রধান দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৌর কর্পোরেশনের সহযোগিতায় অনুরাগ তিওয়ারি নামে একজন এগিয়ে এসে রেকার্ট (REKART) নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, রেকার্ট মানুষের দোরগোড়ায় গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করে সেটা আবার পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলে।
অনুরাগ হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা শেষ করার পরে তিনি দুই বছর ভারতী এয়ারটেল কোম্পানিতে কাজ করেন। তবে তার মন সর্বদা অসাধারণ কিছু করার চিন্তা করত। তাই তিনি এবং তার বন্ধু ষভ ভাটিয়ার একটি নতুন উদ্যোগ শুরু করলেন যার বার্ষিক টার্নওভার বর্তমানে ৫-১০ কোটি রুপিতে পৌঁছেছে। কিন্তু এই কয়েক কোটি টাকায় তাঁর তৃষ্ণা নিবারণ হয়নি। তিনি এমন কিছু করতে চেয়েছিলেন যা বার্ষিক আয় ১০০ কোটি টাকার টার্নওভার থাকবে।
একদিন অনুরাগ রাস্তা দিয়ে ফরিদাবাদ থেকে গুড়গাঁও যাচ্ছিল, রাস্তার পাশে ময়লার একটি ছোট পাহাড় দেখতে পেলেন। তিনি বুঝতে পারলেন যে এই আবর্জনার বেশিরভাগই পুনর্ব্যবহারযোগ্য। তার মনে একটি ধারণা জন্ম নিলো। সে কেবল শহরটি পরিষ্কার করার জন্যই নয়, সমস্ত বর্জ্য পদার্থ পুনর্ব্যবহার করতে কাজ করা শুরু করলেন।
তাঁর ধারণাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে তিনি তার দুই বন্ধু ষভ এবং ভেঙ্কটেশের সাথে নিয়ে আলোচনা করেন। এই ধারণাটি নিয়ে তাঁর সাথে সহযোগিতা করার জন্য উভয়েই এগিয়ে এসেছিলেন। তাই তারা রেকার্ট চালু করার পর তিনি দিল্লির প্রায় ২৫ লক্ষ বাড়ি এবং গুড়গাঁও এর ৫০ টি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ময়লা সংগ্রহ করার জন ভীষণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
অনুরাগ মূলত শুষ্ক বর্জ্য সংগ্রহ ও সেটা পুনর্ব্যবহারের উপর মনোনিবেশ করেন। এর মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিক, পিচবোর্ড, ধাতু এবং জৈব বর্জ্য। তিনি দুইভাবে এই ময়লাগুলোকে পুনর্ব্যবহারের করেন। একটি শুকনো আরেকটি ভেজা। শুকনোটিকে পুনর্ব্যবহারের জন্য পাঠানো হয় আর ভেজাটা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করেন।
তার এই সফলতার জন্য ভারত সরকার তাকে এক মাসের জন্য ইন্দো-জার্মান প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে একটি সেমিনারে অংশ নিতে জার্মানিতে প্রেরণ করছেন। অনুরাগ এটিকে একটি দুর্দান্ত সুযোগ হিসাবে বিবেচনা করছেন এবং ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু করার ইচ্ছা আছে তার।
হৃদয় সম্রাট