ফুল কে না ভালোবাসে! ফুল তার রূপ, গন্ধ দিয়ে আমাদের মাতিয়ে রাখে সারাক্ষণ। কারো পছন্দ গোলাপ, কারো রজনীগন্ধা, কারো পছন্দ আবার দুষ্প্রাপ্য ক্যামেলিয়া।
ভালো লাগা, ভালোবাসার পাশাপাশি উৎসব-পার্বণে ফুল অতি প্রয়োজনীয়। বারো মাসই তাই ফুলের চাহিদা থাকে। বিশেষ করে জন্মদিন, বিয়ে, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে থাকে ফুলের চাহিদা।
তবে প্রতি বছর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই চার মাস ফুলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি।
এতে প্রতি বছর দেশে প্রায় ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার ফুল বাণিজ্য হয়। বিভিন্ন ফুল ব্যবসায়ীর তথ্য মতে মোট চাহিদার ৯৫ শতাংশই যোগান হয় দেশীয় ফুলে।
এক সময় দেশের ফুলের চাহিদা মেটাতে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ আমদানি করা হলেও তা কমে এখন ৫ থেকে ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। প্রতি বছর গড়ে ২০ শতাংশ হারে দেশে ফুল উৎপাদন বাড়ছে।
বাংলাদেশে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদনের শুভ সূচনা যশোরের ফুলপ্রেমি শের আলীর হাত ধরে। বর্তমানে, চুয়াডাঙ্গা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরসহ ২৪টি জেলায় ফুল উৎপাদন হচ্ছে। প্রায় ১৫,০০০ কৃষকে উৎপাদিত ফুলের বিপণন ব্যবসায়ে অন্তত ১.৫ লাখ মানুষ সরাসরি নিয়োজিত রয়েছেন। ফুল শিল্ল সেক্টরের কার্যক্রমের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছেন প্রায় ৭ লাখ মানুষ। মাত্র ০.৮৩ ডেসিম্যাল জমি নিয়ে শুরু হলেও সারা দেশে এখন ৩,৫০০ হেক্টর জমিতে হচ্ছে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুলের চাষ।
রাজধানীর শাহবাগের বিভিন্ন ফুল ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, বছরজুড়ে বিয়ে-শাদি, স্কুল কলেজের অনুষ্ঠান, বিভিন্ন সংবর্ধনাসহ নানাবিধ অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা থাকে। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস থাকায় সারা দেশে প্রায় ৩ থেকে ৪শত কোটি টাকার ফুল বিক্রয় হয়, যা বাৎসরিক চাহিদার ২০ থেকে ২৫ শতাংশ। এবারও তারই প্রত্যাশী তারা।
তারা আরো জানান, ফুলের মৌসুমে ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই তিন মাসে কেবল শাহবাগেই দৈনিক বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকার ফুল। তবে ২০ ফেব্রুয়ারির সারাদিনের বেচাকেনায় ১.৫ থেকে ২ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।
হাবিবুর রহমান
উদ্যোক্তা বার্তা