আত্মকর্মী ক্যাটাগরিতে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকারী, যুব সংগঠকদের থেকে নারী ও পুরুষ কোটায় প্রথম স্থান অধিকারী, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কোটায় একজন এবং ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী কোটায় একজনসহ মোট ৭ জনকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পুরস্কার দেয়া হয়েছে। তারা হলেন-
১. জনাব সাজিয়া রহমান, তিনি এ বছরে নির্বাচিত আত্মকর্মীদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। তিনি ব্লক-বাটিক, স্ক্রিনপ্রিন্ট প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার প্রাথমিক মূলধন নিয়ে ব্লক-বাটিক, বিউটি পার্লার, রান্না, মোবাইল ফোন সার্ভিসিং, ফ্যাশন ডিজাইন ট্রেডে প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপন করেন। তিনি এ যাবৎ ২৫০০০ যুব এবং যুবমহিলা প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন। বর্তমানে তার প্রকল্পের মূলধন ৭৪ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। তিনি ১৫ জন যুব’র কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।
২. জনাব কে.এম. সবুজ, তিনি এ বছরের নির্বাচিত আত্মকর্মীদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন। তিনি ২০০৭ সালে তিন মাস মেয়াদি গবাদিপশু, হাঁস-মুরগী পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আধুনিক কৃষি নার্সারী ও পোল্ট্রি খামার গড়ে তোলেন। তার বর্তমান মূলধন প্রায় এক কোটি টাকা এবং বার্ষিক নিট আয় ৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তার খামারে ১৬ জন যুব’র কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
৩. জনাব মোহাম্মদ শিবলী সাদিক নোমান, তিনি এ বছরে নির্বাচিত আত্মকর্মীদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। ২০০৯ সালে পারিবারিক হাঁস মুরগি পালন ও খামার স্থাপন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে। তিনি পোল্ট্রি, মৎস্য, ডেইরী এবং সবজি ফলের বাগান ও নার্সারি প্ল্যান্ট সমন্বয়ে একটি “এগ্রো বেসড” খামার স্থাপন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে তার প্রকল্পে নিয়মিত ৫জন স্থায়ী এবং ১৩ থেকে ১৪ জন কর্মী অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করছেন।
৪. যুব নেতৃত্ব বিকাশ ও সামাজিক কর্মকান্ডে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ রোকিয়া বেগম শেফালী যুব সংগঠক হিসেবে সারাদেশে যুব নারী কোটায় প্রথম স্থান অর্জন করায় জাতীয় যুব পুরস্কার ২০২০ প্রদান করা হয়েছে। রোকিয়া বেগম শেফালী দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিয়ে “এসোসিয়েশন ফর ইন্টিগ্রেট ডেভলপমেন্ট কুমিল্লা” প্রতিষ্ঠা করেন। কুমিল্লা শহরের বৃহৎ সংস্থাটির বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড এবং কৃষি গবেষণার কাজ চালিয়ে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন।
৫. যুব নেতৃত্ব বিকাশ ও সামাজিক কর্মকান্ডে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জনাব সাইফুর রহমান কে যুব সংগঠক হিসেবে সারা দেশে যুগপুরুষ’ কোটায় প্রথম স্থান অর্জন করায় জাতীয় যুব পুরস্কার ২০২০ প্রদান করা হয়েছে। ঢাকার পূর্ব রামপুরার সাইফুর রহমান একজন স্ব-উদ্যোগী বন্ধুত্বপূর্ণ ও যুব সংগঠক। বন্ধুত্বের ভাঙ্গন নয় বন্ধুত্ব রক্ষার মাধ্যমে যুব কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সমাজ উন্নয়নমূলক কাজে অবদান রাখার ব্রত নিয়ে এক ঝাঁক যুবদের সমন্বয় ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রিয়াল ফ্রেন্ডশিপ এসোসিয়েশন’ (আরএফএ)। এই সংগঠনের মাধ্যমে সারাদেশে যুবদের সুসংগঠিত করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অনুপ্রাণিত করে যাচ্ছেন। যুবদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দক্ষতা বৃদ্ধি উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও নেতৃত্বের বিকাশ এর উপর তিনি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
৬. যুব নেতৃত্ব বিকাশ ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জনাব ইলিয়াস হোসেনকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কোটায় জাতীয় যুব পুরস্কার ২০২০ প্রদান করা হয়েছে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ইলিয়াস হোসেন। তিনি একজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি। ২০০৭ সালে তিনি ‘থ্রিষ্টার যুব অরগানাইজেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সামাজিক কর্মসূচি পরিচালনার পাশাপাশি যুবকদের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করে থাকেন।
৭. কর্মসংস্থান সৃজন ও আত্মকর্মসংস্থানে গৌরবোজ্জ্বল অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জনাব মা সিং নু মারমাকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটায় জাতীয় যুব পুরস্কার ২০২০ প্রদান করা হয়েছে। পাহাড়ী জনপদ বান্দরবান সদর উপজেলার এক অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তান তিনি। তিনি বান্দরবান যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে তিন মাস মেয়াদি গবাদিপশু, হাঁস-মুরগী পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ, এবং কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও যুব ঋণ গ্রহণ করে গরু মোটাতাজাকরণ, মুরগির খামার পালন, গাভী পালন, সেগুনবাগান ও সবজি চাষের প্রকল্প শুরু করেন। তার বার্ষিক নীট আয় ১০ লক্ষ টাকা।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা