নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে এবার দেশেই কৃত্রিম পিচ তৈরি করেছে পিরোজপুরের একদল কারিগর। এতে করে বর্ষা মৌসুমে ক্রিকেট খেলতে আর কোনো বাঁধা থাকবে না৷ দেশি এই ম্যাট তৈরির কারিগরদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে বিসিকের কর্মকর্তাবৃন্দ।
পিরোজপুরের নেছারাবাদে ক্রিকেট ব্যাট তৈরির সুখ্যাতি আছে বহুকাল ধরে। প্রায় ৩ যুগ ধরে এখানে তৈরি হচ্ছে ক্রিকেট ব্যাট। বর্তমানে বিশ্বমানের ব্যাটও তৈরি হচ্ছে। তবে করোনাকালিন সময়ে কমেছে ব্যাটের উৎপাদন। সরকারি নানারকম সহায়তা আশা করছে এসব ব্যাট কারিগররা। নেছারাবাদ উপজেলায় ৫০টি কারখানায় প্রায় আড়াই হাজার কর্মী কাজ করছে এই ব্যাট নিয়ে।
তবে ব্যাটের পাশাপাশি নারিকেলের ছোবড়া দিয়ে ক্রিকেট পিচ তৈরি হচ্ছে তা অনেকেরই অজানা। ছোবড়া শিল্পের কারিগররা তৈরি করছে এই পিচ। বর্ষা মৌসুমে অনুশীলনের জন্য ব্যবহার করা হয় বিদেশি পিচ কিন্তু এখন বিকল্প পিচ তৈরি হচ্ছে স্থানীয়ভাবে। যার প্রধান উপকরণ নারিকেলের ছোবড়ার সুক্ষ্ম রশি। যা স্থানীয় ভাষায় কাতরা নামে পরিচিত। একটা পিচ তৈরিতে কাতরা লাগে ১০ হাজার টাকার এবং ৩ জন শ্রমিককে কাজ করতে হয় ৬ দিন। ম্যাটটি ৬৬ ফুট দৈর্ঘ্য ৮ ফুট প্রস্থ ও আধা ইঞ্চি পুরো হয়। প্রতিটি পিচ তৈরিতে খরচ হয় ২৭ থেকে ২৮ হাজার টাকা। আর বিক্রি হচ্ছে ৩৫ হাজার টাকায়।
শিল্প মালিক ও শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়াতে কাজ করবে বিসিক। চাহিদা অনুযায়ী ঋণ পেতে সহায়তা করবে সরকারের এই সংস্থা। বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক মিল্টন চন্দ্র বৈরাগী বলেন, ‘ক্রিকেট ব্যাটের পাশাপাশি এই ম্যাট শিল্পকে আরো প্রসার এবং প্রচার করার জন্য বিসিক এবং অন্যান্য সরকারি দপ্তর থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ এবং ঋণ সহায়তা দেয়া হবে। এই শিল্প যাতে দ্রুত বিস্তার লাভ করে সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
বাণিজ্যিক সম্ভাবনাময় এই পিচ নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। বিদেশেও তৈরি হতে পারে এর বাজার। সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের মাটিতে তৈরি হতে পারে উন্নতমানের ক্রিকেট পিচ – এমনটাই মনে করেন স্থানীয়রা।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা