ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করে বেপজা পাবলিক স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন  রেজবিন। শিক্ষকতার পাশাপাশি এম.বি.এ শেষ করা। এরই মাঝে কেটে যায় শিক্ষকতার দশ বছর। 

স্বামী হাফিজুর রহমান পেশায় লেদার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় রেজবিন স্বামীর সঙ্গে বিভিন্ন ফ্যাক্টরি ঘুরতেন, সেখান থেকেই চামড়াজাত পণ্যের প্রতি এক দুর্নিবার আকর্ষণ অনুভব করলেন এবং চামড়াজাত পণ্য দিয়ে নিজের দেশকে, দেশের একটি খাতকে আরো সমৃদ্ধ করা যায় এটাই রেজবিন কে নিয়ে আসলো উদ্যোক্তা হবার ভুবনে।

স্বামীর উৎসাহে মাত্র ৩ লাখ টাকা এবং একজন কর্মী নিয়ে একটি মাত্র সুইং মেশিন নিয়ে সাভারের জিরাবো তে একটি পাঁচশ স্কয়ার ফিটের ফ্যাক্টরিতে যাত্রা শুরু উদ্যোক্তা রেজবিন হাফিজের। মাত্র ৭৫ টাকা দিয়ে একটি লেডিস ডিজাইন্ড স্যান্ডেল বানালেন রেজবিন। আমেনা সুপার শপে স্যান্ডেল বিক্রি করে অভাবনীয় সাড়া পান রেজবিন। 

উদ্যোক্তার সফলতার গল্প দেখুন ইউটিউবে-দেখতে ক্লিক করুন

তিন মাস পর একটা মেলায় নিজের পণ্যের পসরা সাজালেন উদ্যোক্তা রেজবিন হাফিজ। গুণগত মান ও চমৎকার সব ডিজাইন দিয়ে ক্রেতাদের আকর্ষণ করাই মূল লক্ষ্য ছিল রেজবিনের। ওই মেলাতে ৭৫ হাজার টাকার বিক্রয় উদ্যোক্তাকে বলে দেয় উদ্যোক্তার সামনে এগিয়ে যাবার কথা।

রেজবিন হাফিজ উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, “স্বামীর অনুপ্রেরণাতেই ২০১৪ সালে পিপলস ফুটওয়্যার এন্ড লেদার গুডস দিয়ে আমার উদ্যোক্তা হিসেবে পথ চলা শুরু।”

শিক্ষকতা অনেক প্রিয় হলেও সময় দেওয়া সম্ভব হলো না। দিনে ১২ ঘন্টা করে ফ্যাক্টরিতে কাজ করা শুরু করি। এর মাঝেই বিশ্বের একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের প্রথম নিয়মিত অর্ডার এবং ডেলিভারি দেবার সক্ষমতা অর্জন করি।” 

একটি, দুইটি করে বিদেশী, দেশী বড় বড় ব্র্যান্ড এর অর্ডার উদ্যোক্তার ফ্যাক্টরিতে। উদ্যোক্তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বিভিন্ন ধরনের সু, লেডিস স্যান্ডেল, জেন্টস স্যান্ডেল, বেল্ট, মানিব্যাগ, লেডিস ব্যাগ, জেন্টস অফিসিয়াল ব্যাগ, চাবির রিং ইত্যাদি রেজবিনের ফ্যাক্টরিতে তৈরি হচ্ছে । 

প্রায় একশ ডিজাইনের ওপর প্রোডাক্ট লাইন, অর্ডার ভিত্তিতে ৩৫ থেকে ৪০ জন কর্মী কাজ করে আজ উদ্যোক্তার ফ্যাক্টরিতে। 

রেজবিন জানান, সাব কন্ট্রাক্টে মালয়েশিয়া এবং জাপানের জন্য তৈরী করছেন ছোট ছোট অর্ডার। বর্তমানে ক্লায়েন্ট লিস্ট এ আছে প্রায় ২৫ টি ছোট বড় প্রতিষ্ঠান।

শুধু তাই নয় উদ্যোক্তা নিজে কয়েকজনকে নিয়ে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর এ শাহ মখদুম এভিনিউতে গড়ে তুলেছেন ওপেন ফ্যাশন হাউজ কনসেপ্ট এ লেদার প্রোডাক্ট জোন, যেখানে ডিসপ্লে এবং সেলস এর কাজ করছেন উদ্যোক্তা নিজেই। 

দেশের একটি সেক্টরকে শক্তিশালী করবার প্রত্যয় নিয়ে রেজবিন আজ তৈরি করছেন সাতশ টাকা থেকে তিন হাজার টাকার পণ্য যা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে অভিজাত ফ্যাশন ডিজাইন হাউজগুলোতে বিক্রি হচ্ছে।

মাত্র তিন লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসায় নেমে বর্তমানে সব মিলিয়ে ২০ লাখ টাকার ব্যবসা পরিচালনা করছেন সফল নারী উদ্যোক্তা রেজবিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here