পাহাড়ি পণ্যতে সুক্তার সফলতা

0
উদ্যোক্তা - সুক্তা বড়ুয়া

পাঁচ মাস আগে ছিলেন সাধারণ একজন গৃহবধূ।নিজ প্রয়োজন মেটাতে স্বামী বা বাড়ির কারও কাছে হাতখরচের টাকা চাওয়া মোটেও পছন্দের ছিল না সুক্তার। তাইতো উদ্যোক্তা হয়ে নিজ কর্ম দিয়ে সাধারণ গৃহবধূ পরিচয় ঘুঁচালেন চট্টগ্রামের সুক্তা বড়ুয়া।

খাগড়াছড়ির কাঁচা হলুদ, হলুদের গুড়া, রাজমা, শিমের বিচি, পাহাড়ি বিনী চাল, বিভিন্ন পাহাড়ি পণ্য এবং চাকমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘পিনন’ শাড়ি দিয়ে উদ্যোক্তা সুক্তা বড়ুয়া কেড়েছেন অসংখ্য ক্রেতার মন।

২০২১ সালের ২০ মার্চ শুরু করা এই উদ্যোগে মাত্র ৫ মাসের ব্যবধানে সারা দেশের অনেক ক্রেতা সুক্তা বড়ুয়ার রিপিট এবং রেগুলার কাস্টমারের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন।

ফেসবুকে ‘আরশি ফ্যাশন এবং অদিতি সুপার শপ’ নামে দুটি পেজ রয়েছে সুক্তা বড়ুয়ার।যেখান থেকে প্রতিনিয়ত দেশের বিভিন্ন জায়গায় পণ্য গুলো যাচ্ছে।

কাজের শুরুতে হলুদের গুড়াকেই কেন বাছাই করলেন? এমন প্রশ্নে তিনি উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘‘খাগড়াছড়ির হলুদের সুনাম দেশজুড়ে। আর আমার জন্মের আগে থেকেই আমার বাবা এখানকার হলুদের ব্যবসা করতেন। তাই ছোট বেলা থেকে দেখতে-দেখতে এ বিষয়ে আমার একটা অভিজ্ঞতা তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সে কারনেই আমি শুরুতে হলুদের গুড়া বাছাই করেছি। এছাড়া রাজমা, শিম এগুলো আমি বাসায় চাষ করি।’’

চট্টগ্রামের রাংগুনীয়াই সুক্তা বড়ুয়ার জন্ম হলেও বেড়ে উঠেছেন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে। খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ হতে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন তিনি। বর্তমানে স্বামীর চাকরির সুবাদে চট্টগ্রামে বসবাস করেন সুক্তা। তবে কিছুদিন আগে স্বামী বদলি হয়ে এসেছেন খাগড়াছড়িতে।কিন্তু সন্তানের পড়াশোনার জন্য সুক্তা বড়ুয়া এখনো চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।বাচ্চা, সংসার এগুলো সামলিয়ে সমান তালে করে যাচ্ছেন নিজের কাজ।

প্রতিদিনের এতো অর্ডার, সেগুলো পণ্য রেডি করা এক কুরিয়ার থেকে অন্য কুরিয়ারে দৌড়ে-দৌড়ে পণ্য গুলো পৌঁছানো সবই করছেন নিজ হাতে।তবে উদ্যোক্তার স্বামী এখন খাগড়াছড়িতে অবস্থান করায় খাগড়াছড়ির ভালো মানের হলুদ সংগ্রহ করার কাজে উদ্যোক্তাকে সহোযোগিতা করছেন তিনি।

উদ্যোক্তা হতে গেলে মূলধন কি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, আপনি কি মনে করেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ‘উদ্যোক্তা হতে গেলে ধৈর্য এবং ইচ্ছা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।একজন উদ্যোক্তাকে অবশ্যই অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে এর কোন বিকল্প নেই।কারন উদ্যোক্তা হওয়ার পর যে তখনি সফল হবেন তা কিন্তু নয় অনেক বাঁধা আসবে ধৈর্য নিয়ে সেগুলো জয় না করলে কখনোই সফলতা আসবেনা। আপনি হয়তো অনেকবেশি মূলধন নিয়ে কাজ শুরু করলেন। কিন্তু বাঁধা আসছে দেখে থেমে গেলেন ধৈর্য ধরলেন না তাহলে কিছুতেই জয় সম্ভব নয়।’

তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা যে কাজ ই শুরু করেন না কেন ধৈর্য রাখবেন নিজের ইচ্ছেকে স্থির রাখবেন তাহলে নিশ্চয়ই এগিয়ে যাবেন আর আপনারা এগিয়ে গেলেই আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে।’

তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here