পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার আটঘর কুড়িয়ানার পেয়ারার খ্যাতি দেশজুড়ে। কুড়িয়ানাসহ পাশের জলাবাড়ি ও সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের ২২টি গ্রামের ৮৫০ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ২৫টি পেয়ারাবাগান রয়েছে। শুধু কুড়িয়ানাতেই ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়। এ বছর প্রতি হেক্টরে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ টন।
এখানকার মানুষের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পেয়ারা। কুড়িয়ানা ছাড়াও ঝালকাঠির ভীমরুলিতেও পেয়ারার ভাসমান হাট বসে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা এসব হাটে পেয়ারা কিনতে আসেন। প্রতিবছর পেয়ারার মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা পেয়ারাবাগানে ভ্রমণে আসেন। পেয়ারাবাগান ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র।
পেয়ারার বাগান ও ভাসমান বাজার পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিমোর। তিনি ট্রলারযোগে কুড়িয়ানার পেয়ারার ভাসমান বাজারে বেড়াতে যান। সেসময় তিনি আদমকাঠি পেয়ারা বাগানে গড়ে তোলা ফ্লোটিং পেয়ারা পার্ক ও রিয়ান পেয়ারা পার্ক ঘুরে দেখেন৷
বর্ষাকাল পেয়ারার ভরা মৌসুমে সন্ধ্যা নদীর শাখা আটঘর কুড়িয়ানা খালে বসে ভাসমান হাট। ভাসমান হাট ঘিরে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমন ঘটে। ছোট ছোট নৌকায় পেয়ারা বেচাকেনার দৃশ্য মুগ্ধ করে পর্যটকদের। পেয়ারাবাগানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে পেয়ারার পার্ক ও পিকনিক স্পট।
পাঁচ বছর আগে কঠুরাকাঠি গ্রামে ১০ একর পেয়ারা বাগান বন্দোবস্ত নিয়ে তিন ভাই গড়ে তুলেছেন ন্যাচারাল ট্যুরিজম অ্যান্ড পিকনিক স্পট। পাশের আদমকাঠি গ্রামেও রয়েছে দুটি বিনোদনকেন্দ্র। দুই বছর আগে এ গ্রামে তিন একর জমিতে যাত্রা শুরু হয় রিয়ান পেয়ারা পার্কের।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জুলাই ও আগস্ট– এই দুই মাস পর্যটকদের ভিড়ে মুখর থাকে বিনোদনকেন্দ্রগুলো। শীত মৌসুমেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক দূর-দূরান্ত থেকে আসেন। পেয়ারার মৌসুমে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার দর্শনার্থী আসেন।
ঝালকাঠির ব্রান্ড পণ্য ‘পেয়ারা’। এই পেয়ারা বাগানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক পর্যটন কেন্দ্র। ট্যুরিজম সেক্টরে বাড়ছে উদ্যোক্তার সংখ্যা। পদ্মা সেতুর কারণে যাতায়াত ব্যবস্থা হয়েছে সহজতর। তাই এই ভরা মৌসুমে অনেক পর্যটক আসছেন বিশ্বের একমাত্র ভাসমান পেয়ারা বাগান দেখতে।
সেতু ইসরাত,
উদ্যোক্তা বার্তা