দুই ভাই-বোনের মধ্যে ইশরাত জাহান বড়। জন্ম চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে। তিনি বেড়ে ওঠেন এক শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারে থেকে। যদিও তার বাবা ঢাকাতে থাকেন, শুধু দাদীর জন্য গ্রামে থেকে গিয়েছিলেন তিনি।
এরপর সপরিবারে ঢাকাতে অবস্থান করছেন ২০ বছর ধরে। ঢাকাতে পড়াশোনা করলেও পরীক্ষা দিতে গ্রামে যেতেন ইশরাত জাহান। কারন, তিনি চাচার স্কুল এবং মামার কলেজে পড়াশোনা করেন। তিনি বলেন, গ্রাম থেকে শহরে ভালো পড়াশোনার জন্য অনেকে আসলেও আমার গ্রামের স্কুল-কলেজে পড়াশোনার মান ভালো। এরপরে তিনি অনার্স এবং মাস্টার্স শেষ করেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে। এছাড়া তিনি আরো একটি সাউথ ওয়েল ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে ডিজিটাল বিপনণ মাস্টার্স করেন।
নিজের অভিজ্ঞতা বাড়ানোর জন্য পড়াশোনার পাশাপাশি অনার্স ১ম বর্ষ থেকে খন্ডকালীন জব করেন। এর পর একাডেমিক পড়াশোনার পর তিনি ফটোগ্রাফি করতেন, মূলত তিনি একজন ফটোগ্রাফার হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিদিন, সমকালে কাজ করেন। স্থায়ী চাকরি না হওয়ায় এটা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন।
এসময় পরিবার থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সমস্ত বাধা পেরিয়ে উদ্যোক্তা হবার প্রত্যয়ে এক বন্ধুর পরামর্শে একত্রে উদ্যোক্তা হওয়ার কাজ শুরু করেন।
ইভেন্ট নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা ছিল উদ্যোক্তার। যেহেতু বাবা, মামা ব্যবসায়ী সেখান থেকেই উদ্যোক্তা হওয়ার প্রত্যয় গড়ে ওঠে। তিনি বলেন, বাবাসহ পরিবারের সবাই শিক্ষিত হবার পরও এ কাজে বাধা ছিল, তবুও নিজের ইচ্ছায় আজ তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা।
প্রথম ৬ টা কাজের মধ্যে ২ টা বিক্রি করেন। এ নিয়েই উদ্যোক্তা ইশরাত জাহানের পথচলা ২০১৫ সাল থেকে। এরপর দীর্ঘ ৫ বছরে পিছু ফিরতে হয়নি কখনো। নিজ উদ্যোগে করা এই কাজ থেকে আজ তিনি একজন কারখানার মালিক এবং এই সমাজ ব্যবস্থার একজন সফল উদ্যোক্তা।
পান্থপথের অফিস ৪ তলায়, স্টোর ৬ তলায়। সম্পূর্ণ নিজের কারখানা গড়ে তোলেন এবং এখানে নিজস্ব ডিজাইনের পণ্য উৎপাদন করেন। এখানে ২০ জন কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন বাকি কাজ মিরপুরে করেন। ইশরাত জাহানের প্রতিষ্ঠানের নাম দেন ‘এফ এন্ড সি’। এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাইরে তিনটা দেশের এজেন্ট রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ইউকে ও ইউএসএতে। এছাড়াও সারাবিশ্বে পণ্য ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা জেলায় পণ্য বিক্রি করেন তারা। প্রতি মাসে ৫০০-৬০০ পিস পন্য বিক্রি করে থাকেন।
তিনি কাজ করেন এক পিস এর, ডি এন্ড জি (ডোলসে এন্ড গাব্বানা), কোকো স্যানেল, টম ফোর্ড, ডিওর, আরমানি। সব সময় ভালো জিনিস দেখার কারণে তিনি মনে করেন, মার্কেট তুলনায় তার পণ্যগুলো উন্নত মানের। উদ্যোক্তা ইশরাত জাহান বলেন, এদের সমপরিমাণ কাজ করার এবং ইন্টারন্যাশনালভাবে কাজ করার ইচ্ছা আছে তার।
শারমিন আক্তার
উদ্যোক্তা বার্তা ঢাকা