ভালোলাগা থেকেই ‘ফ্লেয়ার’র সূচনা হয়েছিল। এখন তা দেশে ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে। ভালোলাগার ফ্লেয়ার আজ নিজেকে আত্মনির্ভরশীল করেছে।
নাফিসা সাদাফ আহম্মেদ পরিবারের সঙ্গে ছোট থেকেই রাজশাহীতে বেড়ে উঠেছেন। পড়াশোনা করেছেন রাজশাহীর সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজশাহী মডেল স্কুল এন্ড কলেজে। এইচএসসি দিয়েছেন রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে। এরপর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন নাফিসা।
দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত অবস্থায় নাফিসা সাদাফ আহম্মেদ ভালোলাগা থেকে কাজ শুরু করলেন গ্লাস পেইন্ট নিয়ে। কোথাও প্রশিক্ষণ না নিয়ে নিজের চেষ্টায় শুরু করলেন কাজ।প্রথম পণ্য যখন তৈরি করেন সেটি দেখে নিজে বোঝার চেষ্টা করলেন কি কি সমস্যা রয়েছে। সেগুলো মাথায় রেখে পরবর্তী গ্লাসপেইন্ট করলেন। আগেরটার তুলনায় ভালো হলো পণ্যটি। সেটা দেখে মন আনন্দে ভরে উঠল। এর পর ধারাবাহিকভাবে যে যায়গায় ভুল আছে সেগুলো ঠিক করে পরবর্তী পণ্য তৈরি করতে থাকলেন। যা একটা সময় পরিবার, বন্ধুবান্ধবদের চোখে পড়ে এবং প্রচুর প্রশংসা কুড়ায়। ব্যবসায়ী পিতা ইমতিয়াজ আহম্মেদ শামসুলহুদা এবং ফরিদা জাহানের কন্যা নাফিসা সাদাফ আহম্মেদ এর পর চিন্তা করলেন আর নিজের জন্য, পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের জন্য নয়, এদের পাশাপাশি সকলের জন্য কাজ করবেন।
নিজের জমানো তিন হাজার টাকা নিয়ে হয়ে উঠলেন উদ্যোক্তা। অনলাইনে ফ্লেয়ার নামে একটি পেজ খুললেন। প্রথম দিকে শুধু গ্লাস পেইন্ট করলেও বর্তমানে গ্লাস পেইন্ট, ক্যানভাস পেইন্ট, ক্যানডেল, হ্যান্ড পেইন্টেড ওয়ান পিস তৈরি করছেন। সবটাই সামলাচ্ছেন নিজের হাতে। ফ্লেয়ারকে একটি ব্র্যান্ডে পরিণত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দিন-রাত। অনলাইনে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। দেশের বিভিন্ন জেলাতে ফ্লেয়ারের পণ্য পৌঁছে যাচ্ছে এবং দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কানাডাতেও বেশ কয়েকবার নাফিসা সাদাফের গ্লাসপেইন্ট পৌঁছে গেছে।
শুরুতে যে অর্ডার পেতেন বর্তমানে তার চাহিদা বহুগুনে বেড়ে গেছে। ৩ হাজার টাকা পুঁজি আজ অনেক অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে।
তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে নাফিসা বলেন, পড়াশোনা, খাওয়া দাওয়া, খেলাধুলা, বিশ্রাম বাদ দিয়ে আরো অনেক সময় বাড়তি থাকে সে সময় নষ্ট না করে কাজে লাগানো যায়, যা আমিও লাগিয়েছি। ফলস্বরূপ আমি উদ্যোক্তা হয়ে নিজে উপার্জন করছি। নিজের খরচ নিজে চালাতে পারছি। এটিতে নিজের একটি শক্তি থাকে। প্রতিটি নারীদের সেই শক্তির জায়গা নিজেদের তৈরি করে নেওয়া উচিত। তাই সময় নষ্ট না করে যে যে বিষয় ভালোবাসেন সেটি নিয়ে কাজ শুরু করে দেন, নিজের পরিচয় তৈরি করুন।
তামান্না ইমাম
রাজশাহী ডেস্ক, উদ্যোক্তা বার্তা