উদ্যোক্তা- লুৎফা সানজিদা

নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়েই বিয়ে হয়ে যায় লুৎফা সানজিদার। মায়ের কাছ থেকে হাত পাখা তৈরিসহ কুটির শিল্পের কিছু কাজ শিখেছিলেন। একসময় স্বামীর ব্যবসায় লোকসান দেখা দেয়। যার প্রভাব এসে পড়ছিলো সংসারে।

এমতাবস্থায় সানজিদা ভাবলেন, নিজেই কিছু করবেন। ২৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে চট্টগ্রামের চকবাজারে বুটিকের একটি শো রুম দিলেন। বড়ভাই কাশেম আদনান লিখালিখি করতেন। তিনি অনেকগুলো নাম দিলে সেখান থেকে ‘অনিন্দ্য নামটা বেছে নিলেন শো রুমের জন্য।

কর্মীকে কাজ শিখাচ্ছেন উদ্যোক্তা লুৎফা সানজিদা

সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করা শুরু করলেন সানজিদা। প্রায় ২২ ঘন্টা কাজ করতেন। গবেষণা করতেন ব্যবসাকে কিভাবে আরো এগিয়ে নেয়া যায় পাশাপাশি ফ্যাশনের ভুবন সাঁজাতে বাচ্চাদের পোশাক, পুরুষদের পোশাক, পাঞ্জাবী এবং সেলোয়ার কামিজও বিক্রি শুরু করলেন।

সংসার সামলিয়ে গোপনে নিজের পড়াশোনাটাকেও এগিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি। স্বপ্ন দেখেছেন আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে নিজের কাজ নিয়ে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাবার, স্বাবলম্বী হবার।

নিজ প্রতিষ্ঠানে উদ্যোক্তা ও তার কর্মী

মাত্র ৩ বছরেই নিজের বুটিককে সকলের কাছে ভীষণ গ্রহণযোগ্য করে তুললেন সানজিদা। গতানুগতিক ডিজাইন নয়, সম্পূর্ণ ভিন্ন এবং যেটির যে দাম ক্রেতার কাছে বলা হোক না কেনো, ক্রেতারা বাজার ঘুরে এসে সে দামটি দিয়েই পণ্য ক্রয় করতে শুরু করলেন সানজিদার শো রুম থেকে।

উদ্যোক্তার কর্মব্যস্ত কর্মী

এরপর বুটিকের সাথে কিনে নিলেন একটি পার্লার, ৭ জন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করলেন পার্লারের। নতুন উদ্যমে নতুন পথ চলা, নতুনভাবে শুরু হলো উদ্যোক্তার জীবনের ব্যবসার সফলতার নতুন অধ্যায়। মাইজাস এসে পাশে দাঁড়ালো উদ্যোক্তার, বিউটিফিকেশন অ্যান্ড পার্লার ম্যানেজমেন্ট কোর্স করলেন। বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ব্যাংকিং এ নানান কোর্স, ফ্যাশন ডিজাইনিং, নানা বিষয়ে নানান কোর্স করলেন নিজেকে আরো এগিয়ে নেয়ার উদ্দ্যেশে।

উদ্যোক্তার পার্লারে কর্মব্যস্ত কর্মী এবং উদ্যোক্তা

ব্যবসা তরতর করে বাড়তে থাকলো। বইতে শুরু করলো সফলতা তরী। বাধা ছিলো অনেক, ছিলো নানান প্রতিকুলতাও। মুখ থুবড়ে যাবার মতো অবস্থা হয়েছিলো, হয়েছিলো ব্যবসা বন্ধ করার উপক্রম। কিন্তু নাহ, থেমে থাকেননি সানজিদা, বরংচ দৃঢ় প্রত্যয়ী হয়ে আরো বেশি উদ্যমী এগিয়ে গিয়ে বর্তমানে সফলভাবে নিজের ব্যবসা পরিচালনা করছেন উদ্যোক্তা লুৎফা সানজিদা।

জেবুননেসা প্রীতি
এসএমই করেস্পন্ডেন্ট ,উদ্যোক্তা বার্তা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here