করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)-এর আওতাধীন শিল্পনগরীসমূহের চাল উৎপাদনকারী কারখানাগুলো উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে এসব শিল্পনগরীতে দৈনিক গড়ে ১ হাজার ৯ শত মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হচ্ছে।
বিসিক শিল্পনগরীসমূহ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, সারাদেশে বিসিকের ৭৬টি শিল্পনগরীর মধ্যে ১৩টি শিল্পনগরীতে চাল উৎপাদিত হচ্ছে। করোনা সংকটকালে দেশের অভ্যন্তরীণ চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পনগরীগুলোতে চাল উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিসিক শিল্পনগরী পাবনায় দৈনিক ৬০০ মেট্রিক টন, রাজশাহীতে দৈনিক ৫৫০ মেট্রিক টন, দিনাজপুরে ৪০০ মেট্রিক টন, নওগাঁতে ১২০ মেট্রিক টন, খুলনাতে ১০৩ মেট্রিক টন, কুড়িগ্রামে ২৭ মেট্রিক টন, কক্সবাজারে ২৫ মেট্রিক টন, জামালপুরে ২৩ মেট্রিক টন, গাইবান্ধায় ২০ মেট্রিক টন, শেরপুরে ১৮ মেট্রিক টন, রাজবাড়ীতে ৯ মেট্রিক টন, গোপালগঞ্জে ৩ মেট্রিক টন এবং বাগেরহাটে ২ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হচ্ছে।
পাবনা বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মোঃ কামাল পারভেজ জানান, শিল্পনগরীতে ৩৯টি রাইস মিল রয়েছে। মিলগুলোতে দৈনিক ৬০০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদিত হচ্ছে , যার বাজার মূল্য দুই কোটি ছিয়াত্তর লক্ষ টাকা। তিনি আরো বলেন, পাবনা বিসিকের এ আর স্পেশালাইজড অটো রাইস মিলস দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির চালকল। এ চালকল সহ পাবনা শিল্পনগরীর রাইস মিলসমূহে উৎপাদিত চাল রাজশাহী, রংপুর ও ঢাকা বিভাগসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়।
বিসিক শিল্প নগরী খুলনায় টানেল ভিটামিন চাল, ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ), ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের ফুড ফ্রেন্ডলি প্রোগ্রাম (এফএফপি) ও সরকারের ত্রাণের চালসহ উন্নতমানের চাল উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, ছয়টি প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যেমন: ভিটামিন এ, বি১, বি৯, বি১২, আয়রন ও জিংক মিশ্রিত ১ শতাংশ টানেল ভিটামিন চাল ও ৯৯ শতাংশ সাধারণ চালের মিশ্রণ খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিতরণ করা হয়। খুলনা শিল্পনগরীতে উৎপাদিত চাল খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোরসহ ৩০টি জেলায় সরবরাহ করা হয় বলে বিসিক শিল্পনগরী খুলনার কর্মকর্তা শেখ রিয়াজুল ইসলাম জানান।
নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরী মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আতাউর রহমান জানান, বর্তমানে বোরো মৌসুমের ধান সংগ্রহ চলছে। ধান সংগ্রহ শেষ হলে চালকলগুলোতে উৎপাদন আরো বাড়বে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিসিক শিল্পনগরীতে অবস্থিত চালকলগুলো থেকে সরকারও চাল ক্রয় করে থাকে। এ প্রসঙ্গে নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ারুল আজিম বলেন, নির্ধারিত মূল্যে নওগাঁ বিসিক শিল্পনগরী থেকে সরকার চাল সংগ্রহ করবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে চালকলগুলোর মালিকপক্ষের সঙ্গে সরকারের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখাসহ জাতীয় খাদ্যনিরাপত্তা জোরদারে বিসিক শিল্পনগরীর এসব কারখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ডেস্ক রিপোর্ট, উদ্যোক্তা বার্তা