‘প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি’ প্রতিপাদ্যে আজ ১২ ডিসেম্বর দেশব্যাপী এবং বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলোতে উদযাপিত হচ্ছে ‘জাতীয় ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’। জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালন করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর।
দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সকালে আইসিটি বিভাগে (আইসিটি টাওয়ার, আগারগাঁও) স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নেতৃত্বে বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমসহ বিভাগ, অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা সেসময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি’ প্রতিপাদ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২’ এর উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন।
বক্তৃতায় তিনি বলেন, ২০৪১ সালে হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে যাবে দেশ। আর সমাজ হবে ‘স্মার্ট সোসাইটি’। ডিজিটাল থেকে এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পালা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্তিক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রমুখ।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল দেশের ১৭ কোটি মানুষ পাচ্ছে। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প ঘোষণা করেন। তখন তা ছিল একজন রাজনৈতিক নেতা জননেত্রী শেখ হাসিনার। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব লাভের পর ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প হয়েছে দেশের সব জনগণের।
তিনি বিগত ১২ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, আইসিটি খাতে প্রযুক্তিনির্ভর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ২০ লাখ। বর্তমানে আইসিটি খাতে রপ্তানি ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অনলাইন শ্রমশক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশের প্রায় সাড়ে ৬ লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সার আউটসোর্সিং খাত থেকে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ৭০০ মিলিয়ন ডলার আয় করছেন। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সঠিক অবকাঠামো গড়ে উঠার কারণে এসব সম্ভব হচ্ছে।
পলক বলেন, এখন নিজের বাহন না থাকলেও রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করে খুব সহজেই গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। প্রতারণা ও হয়রানির শিকার না হয়ে ১০ কোটিরও বেশি নাগরিক মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল ওয়ালেটের মাধ্যমে পরিবারের কাছে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি আর্থিক লেনদেন করতে সক্ষম হচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে দুর্নীতি, অপচয় এবং হয়রানি দূর করার পাশাপাশি গ্রাম-শহর, নারী-পুরুষ ও নবীন-প্রবীণের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ১২ বছরের সাফল্য ও অর্জন তুলে ধরে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাসমূহে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন কুইজ প্রতিযোগিতা, দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলায় ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ বা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক রচনা, উপস্থিত বক্তৃতা, কবিতা আবৃতি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সভা/সেমিনার-এর আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশিরসচেতনতামূলক নাটিকা পরিবেশন, শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, দল ও প্রতিষ্ঠানকে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সাধারণ ও কারিগরি ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তিতে অনন্য অবদানের জন্য ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার এ দিবসটি রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের ঘোষণা দেয়। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আইসিটি দিবসের পরিবর্তে এ দিনকে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ডেস্ক রিপোর্ট
উদ্যোক্তা বার্তা