বিরিয়ানি নামটা শুনলেই খিদেটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। অনেকরকম বিরিয়ানি তো খাওয়া হয়, পর্দা বিরিয়ানি কি চেখে দেখেছেন? ভিন্ন ধরনের এই বিরিয়ানিটি দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে খাদিজা আক্তার দীপা চাইলে বড় কোনো চাকরিতে যোগ দিতে পারতেন। কিন্তু জগৎ-সংসারের নানা প্রতিকূল বাস্তবতায় তা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তাইবলে বহমান জীবনে থেমে থাকলে তো আর চলে না। দিপাও থেমে থাকেননি। কর্মজীবনে অনন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে, নিজের দীপা নামের প্রদীপ জ্বেলেছেন।

ফেসবুকে দীপার পেইজের নাম ‘ফুড পার্ক’। রান্না করা আইটেমগুলো শুধু যশোর এবং যশোরের আশেপাশের এলাকায় ডেলিভারি দেন। শুকনো আইটেমগুলো সারাদেশেই কুরিয়ারে ডেলিভারি দেন। তার ফুড পার্কের সিগনেচার ফুড পর্দা বিরিয়ানি।

বর্তমানে নিজের কাজ নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন উদ্যোক্তা দীপা। তাকে সহযোগিতা করার জন্য একজন বয় আছেন।পার্সেল ডেলিভারি এবং কাচামাল ক্রয় এগুলো তিনি করেন। আপাতত শুধু বাসা থেকেই কাজ চালাচ্ছেন। ভবিষ্যতে একটা আউটলেট/শোরুম দেওয়ার পরিকল্পনা আছে।

কীভাবে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করলেন, জানতে চাইলে দীপা উদ্যোক্তা বার্তাকে বলেন, ‘আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা ২০২০ সালে উই-এর হাত ধরে। সেখানে কিছুদিন অন্যদের পোস্ট ফলো করতে থাকি। এক পর্যায়ে আমি সিদ্ধান্ত নিই আমি নিজেও এমন কিছু একটা করবো।কিন্তু কী করবো সেটা ভেবে পাচ্ছিলাম না। তখন দেখলাম উইতে অনেক আপু হোমমেড খাবার নিয়ে কাজ করেন। তাদের দেখে আমি অনেক উৎসাহিত হই। সেখান থেকেই আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা।’

কতো টাকা মূলধন নিয়ে শুরু করেছেন এবং কী কী পণ্য নিয়ে কাজ করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে উদ্যোক্তা বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যায়ে আমি কোন পুঁজি নিয়ে শুরু করিনি। যেহেতু হোমমেড আইটেম, তাই নিজের সংসারের নিত্য ব্যবহার্য পণ্য থেকেই অর্ডার আসলে খাবার তৈরি করে ডেলিভারি দিতাম। এরপর সেল হলে যে টাকাটা আসে সেটা দিয়েই আমি আমার উদ্যোগের জন্য কাঁচামাল কিনি। হোমমেড খাবার যেহেতু প্রি অর্ডার নিয়ে ডেলিভারি দেই। সেক্ষেত্রে কেমন অর্ডার আসে সেই অনুযায়ী কাঁচামাল সংগ্রহ করি। তাই সেভাবে পুঁজি নিয়ে শুরু করা হয়নি।

হোমমেড সব ধরনের খাবার আমি তৈরি করি। যেমন: বাংলাদেশি খাবার, চাইনিজ, ফাস্ট ফুড আইটেম, পিঠা পুলি, সিজনাল আচার। তবে আমার স্পেশাল আইটেম পর্দা বিরিয়ানি’।

আপনার উদ্যোগে কেমন সাড়া পাচ্ছেন জানতে চাইলে উদ্যোক্তা জানান, ‘আলহামদুলিল্লাহ। বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি। অর্ডার অনুযায়ী ডেলিভারি দেই। মাসে আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার পণ্য ডেলিভারি দেই। তবে কোনো কোনো মাসে কম বা বেশি হয়ে থাকে। স্বপ্ন দেখি একদিন আমার স্পেশাল আইটেম পর্দা বিরিয়ানি দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। জেলায় জেলায় আউটলেট প্রতিষ্ঠা করার’।
সাইদ হাফিজ
উদ্যোক্তা বার্তা, খুলনা









